Homeজাতীয়এস আলমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ ‘সুনাম নষ্টের প্রচেষ্টা’, দাবি আইনজীবীদের

এস আলমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ ‘সুনাম নষ্টের প্রচেষ্টা’, দাবি আইনজীবীদের


বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠীর মালিক সিঙ্গাপুরের নাগরিক সাইফুল আলম মাসুদ ওরফে এস আলম ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগের সংস্থা তদন্ত চালাচ্ছে সরকারের একাধিক সংস্থা। এসব অভিযোগলোকে ‘সুনাম নষ্টের প্রচেষ্টা’ বলে অভিযোগ করেছেন এস আলমের আইনজীবীরা।

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এই তদন্তের মুখে এস আলম ছাড়াও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং দুই ছেলে আশরাফুল আলম ও আহসানুল আলমও রয়েছেন।

এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল আলম মাসুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ১ হাজার ২৮৯ কোটি সিঙ্গাপুর ডলার (১,১৩,২৪৫ কোটি টাকা) বাংলাদেশ থেকে পাচার করেছেন। সিঙ্গাপুরে ‘ক্যানালি লজিস্টিকস’ নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার জন্য এসব অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে।

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের ব্যবসা খাদ্য, উৎপাদন, জ্বালানি, পরিবহন, আবাসন ও টেলিযোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে বিস্তৃত।

২০০৯ সালে এস আলম সপরিবারে স্থায়ীভাবে সিঙ্গাপুরে বসবাস শুরু করেন। ২০২৩ সালে তাঁরা সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব পান।

তাঁদের কোম্পানি ক্যানালি লজিস্টিকস ২০০৯ সালে সিঙ্গাপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সালে এই কোম্পানি ‘হিলটন গার্ডেন ইন সিঙ্গাপুর’ কিনে নেয়।

বাংলাদেশের সিআইডির অভিযোগ, এস আলম গ্রুপের প্রধান সাইফুল আলম মাসুদ ভুয়া নথি ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। এসব অর্থ তিনি সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে পাচার করেছেন।

এস আলমের স্ত্রী পারভীন, তাঁদের ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে।

তবে মাসুদের আইনজীবীরা এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তারা স্ট্রেইটস টাইমকে বলেছেন, মাসুদ সবসময় বৈধ উপায়ে ব্যবসা পরিচালনা করেছেন এবং এসব অভিযোগ তার সুনাম নষ্টের চেষ্টা।

সিঙ্গাপুরের এস আলমের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ওং পার্টনারশিপ জানিয়েছে, বাংলাদেশি কিছু বেসরকারি গণমাধ্যম থেকে এস আলম, তাঁর পরিবার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। তাঁর আইনজীবীরা দাবি করেছেন, এসব অভিযোগ ‘কুৎসা রটনার’ অংশ।

আইনজীবীরা স্ট্রেইটস টাইমসকে বলেন, ‘যথাযথ ও বৈধ পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার আইন ও নিয়মকানুন মেনে সর্বদা ব্যবসা পরিচালনা করেছেন বলে এস আলম আত্মবিশ্বাসী।’

তাঁরা অভিযোগ করেন, রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থাকে ব্যবহার করে ‘অবৈধ, স্বেচ্ছাচারী ও বৈষম্যমূলকভাবে’ এস. আলম গ্রুপের সম্পদ ও ব্যাংক হিসাবসমূহ জব্দ করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।

চলতি বছর আগস্টে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তার গঠিত বিশেষ কমিটি এই মাসেই বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, হাসিনা সরকারের সময়ে প্রতি বছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশের বাইরে পাচার হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে তদন্তের জন্য দুদক এবং সিআইডি ব্যাংক কর্মকর্তাদের তলব করেছে। এস আলম গ্রুপ তাঁদের সহায়তায় বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা গ্রুপ অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টেরর নথি অনুযায়ী, গোল্ডেন ভিসা প্রোগ্রামের আওতায় বিনিয়োগের মাধ্যমে এস আলম পরিবার ২০১৬ সালে মাধ্যমে সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব অর্জন করেন।

আইনজীবীরা বলেন, এস আলম পরিবার ২০০৯ সালে সিঙ্গাপুরে বসবাস শুরু করেন এবং ২০১১ সালে সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হন। তাঁরা ২০২৩ সালে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব লাভ করেন।

দ্য স্ট্রেইটস টাইমস সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এই অভিযোগগুলির বিষয়ে জানতে চেয়েছিল। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো আইনি সহায়তার অনুরোধ এসেছে কি না, তাও জানতে চাওয়া হয়।

অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বিশ্বাসযোগ্য ও বৈধ প্রমাণ থাকলে সিঙ্গাপুরের মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স (এমএসিএমএ) আইনের আওতায় বাংলাদেশ সহায়তা চাইতে পারে। এর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করতে পারে।

সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আইনটির আওতায় সিঙ্গাপুর বিদেশি রাষ্ট্র বা অঞ্চলের সঙ্গে আইনি সহায়তায় যুক্ত হতে পারে। সম্পদ ফেরত বা আনা এবং বিদেশের জব্দ আদেশের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত তথ্য ভাগাভাগি এই আইনে সম্ভব।

‘তথ্যের বিনিময় ও সম্পদ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ সব বিদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিকভাবে কাজ করে।’





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত