Homeজাতীয়এনআইডি সার্ভার অপব্যবহারে জড়িতদের রেহাই নেই: ডিজি

এনআইডি সার্ভার অপব্যবহারে জড়িতদের রেহাই নেই: ডিজি


এনআইডি সার্ভার অপব্যবহারে জড়িতদের রেহাই নেই। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) এএসএম হুমাযুন কবীর। রবিবার (২২ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের ডেকে তিনি এ কথা বলেন।

ডিজি এএসএম হুমাযুন কবীর বলেন, এনআইডি সার্ভার অপব্যবহারে যারা জড়িত ছিল, তাদের তো বাঁচবার আসলে কোনও সুযোগ নেই। নিশ্চয় অপরাধ অনুযায়ী যে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, সেটাই নেওয়া হবে।

ডিজি বলেন, ইসি থেকে আমরা আমাদের ডাটা সেন্টার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে থাকি। আমাদের কিছু নিয়ম-কানুন আছে।

 মহাপরিচালক বলেন, এনআইডি’র তথ্য সংশোধনে জমা হওয়া তিন লাখ ৭৮ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি করতে জানুয়ারি থেকে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম নেওয়া হবে।

ইসির তথ্যভাণ্ডার থেকে সংযোগ নিয়ে কম্পিউটার কাউন্সিল ‘পরিচয়’ প্ল্যাটফর্মকে তা ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে। ওই সংযোগ থেকে তথ্য নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে আসছে ‘পরিচয়’ প্ল্যাটফর্ম। রবিবার (২২ ডিসেম্বর)  ওই সংযোগ বন্ধ করায় ‘পরিচয়’ প্ল্যাটফর্ম থেকে আর কোনও প্রতিষ্ঠান তথ্য পাবে না।

এ বিষয়ে এ এস এম হুমায়ুন কবীর  বলেন, আমাদের ডাটা সেন্টার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে থাকি। আমাদের কিছু নিয়ম কানুন আছে। আমরা ১৮৩টি প্রতিষ্ঠানকে চুক্তির ভিত্তিতে সেবা দিয়ে থাকি। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) সঙ্গেও আমাদের একটা চুক্তি ছিল। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, এনআইডি সার্ভারের তথ্য অন্য কোনও প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি, স্বত্বা বা পক্ষকে হস্তান্তর করতে পারবে না৷ অথবা বিনিময়, বিক্রয় কিংবা অন্য কোনও পন্থায় দিতে পারবে না। এই শর্ত ছি। কিন্তু বিসিসি সেটা লঙ্ঘন করেছে। এজন্য ইসি থেকে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন তারা কোনও জবাব দেয়নি, নীরব ছিল। পরবর্তী সময়ে গত ৬ অক্টোবর তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হলে বিসিসি একটা জবাব দেয়। তবে সুনির্দিষ্টভাবে যা জানতে চাওয়া হয়েছিল, তার উত্তর না দেওয়ায় ওই জবাব গ্রহণ করেনি ইসি। তারই ধারাবাহিকতায় চুক্তিটি বাতিল করা হয়েছে৷ একইসঙ্গে তাদের যে এপিআই (এনআইডি যাচাইয়ের লিংক) সংযোটি ছিল সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

নাগরিকদের গোপনীয়তার শর্ত লঙ্ঘন করে ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। খবরে বলা হয়,  ‘‘জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্যভাণ্ডার থেকে অন্তত ৫ কোটি নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপন তথ্য বিক্রি হয়েছে। তা নিয়েছে সরকারি-বেসরকারি দেশি-বিদেশি শতাধিক প্রতিষ্ঠান। তালিকায় আছে বিভিন্ন এনজিও। এসব তথ্য বিক্রি করে আসছে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতি একজন ব্যক্তির তথ্যের জন্য ৫, ১০ ও ১৫ টাকা হারে আদায় করছে প্রতিষ্ঠানটি। বেসরকারি ওই প্রতিষ্ঠানের নাম ‘পরিচয়’। ‘সরকারি ই-সেবা’ দেওয়ার নামে নির্বাচন কমিশনের তথ্যভাণ্ডারের ডেডিকেটেড সংযোগ এপিআই (অ্যাপলিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস) নেয় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে ওই সংযোগ ব্যবহার করেই জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য বিক্রি করে আসছে ‘পরিচয়’ প্ল্যাটফরম।’’  প্রকাশিত খবরে আরও বলা হয়, ‘নির্বাচন কমিশনও নাগরিকদের তথ্য-উপাত্তের গোপনীয়তা ও সুরক্ষা করেনি। বিসিসিকে তথ্যভাণ্ডারের মিরর কপি দিয়েছে। ফলে নাগরিকদের সব তথ্যই অন্যদের হাতে চলে যায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন দুই কমিশনের সময়ে এসব তথ্য অন্যদের হাতে যায়। এসব প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন, সাবেক ও বর্তমান নির্বাচন কমিশন, আইসিটি বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্তা পাওয়া গেছে।’

এএসএম হুমাযুন কবীর সাংবাদিকদের বলেন, বিসিসি ‘পরিচয়’ প্ল্যাটফর্মের সূত্র ধরে নিজেদের মতো করে একটি সেবা চালু করে, যেখানে ইসির  কোনও সমর্থন ছিল না। ‘পরিচয়’ প্ল্যাটফর্ম থেকে অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেশি দামে কেন তথ্য নিয়েছে তা বোধগম্য নয়। যেসব প্রতিষ্ঠান সেখান (পরিচয়) থেকে তথ্য নিয়েছে, তাদের অনেকের সঙ্গে ইসির চুক্তি রয়েছে। আমাদের সঙ্গে চুক্তি করলে স্বল্প পয়সায় সেবা পাওয়া যায়। তারপরও তারা ওখানে (পরিচয়ের সঙ্গে) কেন চুক্তি করেছে সেটাও কিন্তু একটা বিশাল বিষয়।

এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বলেন, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর চুক্তি সইয়ের পর কত সংখ্যক নাগরিকের তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে, তার পরিসংখ্যান আমাদের কাছে আছে। চুক্তির আগে সংযোগ দেওয়া হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। তারা কোনও তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলেছে কিনা, সেই বিষয়েও আমার কাছে তথ্য নেই। এ সময় তার পাশে থাকা জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক আব্দুল মমিন সরকার সাংবাদিকদের বলেন, চুক্তির আগে বিসিসিকে একটি টেস্ট এপিআই দেওয়া হয়েছিল।

বিসিসি তৃতীয় পক্ষকে তথ্য দেওয়ার প্রক্রিয়ায় ইসির কিছু কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে হুমায়ুন কবীর বলেন, চুক্তি বাতিল হয়েছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের তো বাঁচার আসলে কোনও সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন থেকে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বিসিসি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। ইসিও সরকারি প্রতিষ্ঠান। তারপরও যেহেতু চুক্তি বাতিল ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, তার মানে ইনটেনশনটা বুঝতে পারছেন। কেউ বিকল্প তথ্যভাণ্ডার করে থাকলে নির্বাচন কমিশন নিশ্চয় যে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সেটাই নেবে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্নীতি রোধ করতে আমরা চেষ্টা করছি। তিন মাস পরে আশা করি ভোগান্তি থাকবে না। এনআইডি সংশোধনে তিন লাখ ৭৮ হাজার আবেদন জমা আছে, সেগুলো নিষ্পত্তি করতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম জানুয়ারি থেকে শুরু হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিসিসিকে দেওয়া সংযোগ বাতিল করায় অন্য কেউ সমস্যা পড়েছে এমন তথ্য অফিশিয়ালি আমাদেরকে কেউ জানায়নি। পরিচয় প্ল্যাটফর্ম বা বিসিসি তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলেছে এমন কোনও তথ্যও ইসির কাছে নেই।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত