সাতক্ষীরায় পল্লী বিদ্যুতের লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে শিশুর অঙ্গহানির ঘটনায় চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় খরচের জন্য আপাতত ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই শিশুর পক্ষে করা এ-সংক্রান্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শককে আগামী এক মাসের মধ্যে এই অর্থ দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুহম্মদ তারিকুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ। তারিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিষয়টি একাধিকবার শুনানি হয়েছে।
আদালত বলেছেন ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে। তবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড তা করেনি। রুল বিচারাধীন থাকাবস্থায় চিকিৎসার জন্য অর্থ পেতে নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করলে হাইকোর্ট এই আদেশ দেন।
২০২১ সালে সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নকশা পরিবর্তন করে আব্দুর রাজ্জাকের দোতলা বাসবভনের ওপর দিয়ে ক্যাপ ও কভারবিহীন বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন করে। এই লাইনে সংযোগ না দিতে আবেদন করেছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পর একই বছরের ৯ মে আব্দুর রাজ্জাক ঢালীর ৭ বছরের শিশু রাকিবুজ্জামান ওই তারে বিদ্যুতায়িত হয়।
রাকিবুজ্জামানকে তাৎক্ষণিক সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ১২ মে রাকিবুজ্জামানের ডান হাতের বগল থেকে এবং ডান পায়ের হাঁটু থেকে নিচের অংশ কেটে ফেলতে হয়।
এদিকে ছেলের বিদ্যুতায়িত হওয়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে ২০২১ সালের ২৫ মে আব্দুর রাজ্জাক ঢালী সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্টদের বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু তারা ক্ষতিপূরণ দেয়নি এবং কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি।
পরে আব্দুর রাজ্জাক ঢালী হাইকোর্টে রিট করেন। ওই বছরের ৮ নভেম্বর হাইকোর্ট শিশুর অঙ্গহানির ঘটনায় কী ধরনের চিকিৎসা হয়েছে এবং আরও কী চিকিৎসা প্রয়োজন, সে বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া ওই ছেলের অঙ্গহানির ঘটনায় যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়।
সে অনুসারে ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর এ প্রতিবেদন দেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান। যাতে চিকিৎসার খরচ ধরা হয় ২ কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৮২ টাকা।