Homeজাতীয়অস্বস্তি কাটাতে রাজনৈতিক পর্যায়ে বৈঠকে আগ্রহ

অস্বস্তি কাটাতে রাজনৈতিক পর্যায়ে বৈঠকে আগ্রহ


বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ মাস ধরে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অস্বস্তি বিরাজ করছে। এই অস্বস্তি কাটাতে রাজনৈতিক পর্যায়ে দুই দেশের সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে কথা বলার তাগিদ বোধ করছে উভয় সরকার। এমন বিবেচনায় দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে একটি বৈঠক হবে আগামী রোববার ওমানের রাজধানী মাসকটে।

ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আগামী রবি ও সোমবার (১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি) মাসকটে অবস্থান করার কথা রয়েছে। সেখানে তাঁরা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন, এমনটি জানিয়েছেন কূটনীতিকেরা।

কোন পক্ষের অনুরোধে বৈঠকটি হচ্ছে, এমন প্রশ্নে এক কূটনীতিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পাশাপাশি হলেও মাসকটের বৈঠকটির বিষয়ে দুদিক থেকেই আগ্রহ আছে। সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সেখানে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো আলোচনায় আসতে পারে।

ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক পর্যায়ে বৈঠকের বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই পক্ষই আন্তরিকতা নিয়ে চেষ্টা করলে অস্বস্তি কাটানোর জন্য এ বৈঠকগুলো ভালো সুযোগ।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট দিল্লি চলে যান। তাঁর টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনকাল দুই দেশের সম্পর্কের ‘সোনালি অধ্যায়’ হিসেবে গণ্য করে থাকে ভারত সরকার। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, দিল্লিতে হাসিনার আশ্রয় নেওয়া ও গণহত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাঁকে ফেরত দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধের কারণে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অস্বস্তি বিরাজ করছে। এই অস্বস্তি কাটানোর সূচনা হিসেবে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবেরা গত ডিসেম্বরে ঢাকায় বৈঠক করেন।

কূটনীতিকেরা বলছেন, দিল্লিতে অবস্থান করে শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন বক্তব্য দিতে থাকায় সম্পর্কে অস্বস্তি বাড়ছে। তাঁকে থামাতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সীমান্তে অস্থিরতা বিরাজ করছে। দুই দেশই নিজ নিজ রাজধানীতে অন্য দেশের হাইকমিশনারকে তলব করে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সম্পর্কের নানা জটিল দিক এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক পর্যায় থেকে দিকনির্দেশনা আসা দরকার। তৌহিদ হোসেন ও জয়শঙ্করের মাসকটের বৈঠকটি এ ক্ষেত্রে একটি সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিজ) সাবেক চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ বলেন, সারাক্ষণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রশ্নের মুখে রাখা কোনো দেশের জন্যই কল্যাণকর নয়।

অন্তর্বর্তী সরকার ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পাশাপাশি তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে জয়শঙ্করের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎ হয়। সেখানে তাঁদের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময়ের বেশি কিছু হয়নি, এমনটি মনে করেন দুই দিকের কূটনীতিকেরা। এ কারণে আগামী সপ্তাহে মাসকটের বৈঠকটিতে গুরুত্ব দিচ্ছে উভয় পক্ষ।

কূটনীতিকেরা বলছেন, রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের মধ্যে বৈঠকের পাশাপাশি কর্মকর্তা পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার যে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো আছে, সেগুলোও কাজে লাগাতে চেষ্টা করছে দুই দেশ। এর অংশ হিসেবে ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এর বাইরে কর্মকর্তা পর্যায়ে অন্য কাঠামোগুলোও যাতে সক্রিয় হয়, তেমন চেষ্টা দুদিক থেকেই আছে।

রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের মধ্যে আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে দুই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে একটি বৈঠক হতে পারে, এমন সম্ভাবনা দেখছেন কূটনীতিকেরা। বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৪ এপ্রিল ব্যাংককে অবস্থান করতে পারেন। সেখানে সম্মেলনের পাশাপাশি দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হতে পারেন, এমন সম্ভাবনা দেখছেন কূটনীতিকেরা।

বিমসটেক সেক্রেটারি জেনারেল ইন্দমনি পান্ডে গতকাল ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেছেন, সংগঠনটির শীর্ষ সম্মেলন ৪ এপ্রিল ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হবে। সাত সদস্য রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতারা এ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত