পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) যখন রাচিন রবীন্দ্রের মারাত্মক চোট নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে, তখন বিষয়টি এক অন্যরকম মোড় নিয়েছে। পাকিস্তানের ক্রিকেট মহল রাচিনকেই এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করছে, দাবি করছে আলো নিয়ে কোনও সমস্যা ছিল না।
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের নবনির্মিত ফ্লাডলাইটের তীব্র আলোয় বলের ফোকাস হারিয়ে রাচিন মাথায় আঘাত পান। ক্যাচ ধরতে গিয়ে বল সরাসরি তার কপালে আঘাত হানে, রক্ত ঝরতে থাকে, এবং সঙ্গে সঙ্গে তাকে মাঠ ছাড়তে হয়। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড নিশ্চিত করেছে, রাচিনের কপালে গভীর কাট লেগেছে, তাকে সেলাই দিতে হয়েছে এবং তার সুস্থতা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
পিসিবির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সালমান বাট। তিনি সরাসরি রাচিনের দৃষ্টিভ্রমকেই দায়ী করে বলেছেন, ‘যে আলোয় ১৫০ কিমি গতির বলও ব্যাটসম্যান সহজেই দেখতে পান, সেখানে ৭০ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে থাকা একজন ফিল্ডার কেন বল ধরতে পারবে না? এটি তার ভুল, হয়তো পা পিছলে গেছে। কিন্তু এতে আলোকে দোষারোপ করা যুক্তিসঙ্গত নয়।’
একজন পাকিস্তানি সংবাদ উপস্থাপক আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, ভারতের কটকের বারাবাটি স্টেডিয়ামেও একই সমস্যা হয়েছিল, যেখানে ইংল্যান্ড-ভারত ম্যাচ ৩০ মিনিটের জন্য বন্ধ ছিল। তাহলে শুধু পাকিস্তানকে কেন কাঠগড়ায় তোলা হবে?
পাকিস্তানের সাবেক পেসার তানভীর আহমেদ উল্টো পিসিবির সমালোচনা করে বলেছেন, ‘আমাদের স্টেডিয়াম ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করার সামর্থ্যই নেই। বাজেট কম, অবকাঠামো দুর্বল। রাচিনের ঘটনা এটিই প্রমাণ করে।’
শোয়েব মোহাম্মদ, কিংবদন্তি হানিফ মোহাম্মদের ছেলে, আলো নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, ‘দারিল মিচেলও ফিল্ডিং করার সময় সমস্যায় পড়েছিলেন। ফ্লাডলাইটের অবস্থানই সঠিক নয়। রাচিনের দুর্ঘটনা এটি নিশ্চিত করেছে।’
এই বিতর্কের মধ্যেই পাকিস্তান ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন করতে পারবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নিউজিল্যান্ডের কিছু সমর্থক ইতিমধ্যে পাকিস্তান থেকে টুর্নামেন্ট সরিয়ে নেওয়ার দাবি তুলেছে। তবে পাকিস্তান শিবির বরাবরের মতো আত্মপক্ষ সমর্থনে ব্যস্ত।
রাচিন রবীন্দ্র সত্যিই আলোতে বিভ্রান্ত হয়েছিলেন, নাকি এটি তার ভুল ছিল—এই প্রশ্নের চূড়ান্ত উত্তর হয়তো সময়ই দেবে। কিন্তু তার রক্তাক্ত মুখ, ক্রিকেট বলের আঘাত, আর বিতর্কিত ফ্লাডলাইট বিতর্কের কেন্দ্রে থেকে গেল গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের সেই রাতের ঘটনা।