বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জন্য এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ভুলে যাওয়ার মতো এক আসর। দুটি দলই সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে গেছে, আর এখন তাদের সামনে কেবল একটি লক্ষ্য—সম্মান রক্ষা। কিন্তু সেই লড়াইও অনিশ্চয়তার মুখে! রাওয়ালপিন্ডির আকাশ কালো মেঘে ঢাকা, বৃষ্টির পূর্বাভাস চোখ রাঙাচ্ছে ম্যাচটিকে। এমন অবস্থায় দুই দল কি শেষ ম্যাচটি খেলার সুযোগ পাবে? নাকি আবহাওয়ার কারণে হতাশা নিয়েই বিদায় নিতে হবে?
পাকিস্তানের ব্যাটিং অর্ডার এই টুর্নামেন্টে ছিল অনুজ্জ্বল। ফখর জামান চোটের কারণে ছিটকে যাওয়ায় সুযোগ পেয়েছিলেন ইমাম-উল-হক, কিন্তু তিনি কিছু করতে পারেননি। বাবর আজম ও সৌদ শাকিল একটি করে ফিফটি করলেও দলের ভাগ্য বদলাতে পারেননি। মোহাম্মদ রিজওয়ান শতক হাঁকিয়েছিলেন ঘরোয়া সিরিজে, কিন্তু এখানে সেটার ধারেকাছেও ছিলেন না।
মিডল-অর্ডারও হতাশ করেছে। খুশদিল শাহ, সালমান আগা ও তাইয়্যাব তাহির যেন একই ধরনের ব্যাটার, যার কারণে দল আক্রমণাত্মক হতে পারেনি। বোলিংয়েও পাকিস্তান ব্যর্থ। ভারতের বিপক্ষে শাহীন আফ্রিদি ও হারিস রউফের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক, কেবল নাসিম শাহ কিছুটা ভালো করলেও সেরা ছন্দে ছিলেন না। আবরার আহমেদের এক দুর্দান্ত ডেলিভারির চেয়ে তার সেলিব্রেশনই বেশি আলোচিত হয়েছে!
বাংলাদেশের গল্পটাও প্রায় একই। টপ-অর্ডার একের পর এক ব্যর্থ হয়েছে, মিডল-অর্ডারও ধ্বসে পড়েছে, আর শেষ দিকে কেউ না কেউ চেষ্টা করে দলকে একটু সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে গেছে। ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে পড়ে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাইকেল ব্রেসওয়েলের স্পিন সামলাতে পারেনি ব্যাটাররা। তবুও কিছু ইতিবাচক দিক আছে—নাজমুল হোসেন শান্ত ধারাবাহিক, জাকের আলি দুর্দান্ত খেলেছেন, আর তাওহিদ হৃদয় ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছেন।
তবে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ যদি এটিই তাদের শেষ আইসিসি আসর হয়, তাহলে তারা কি ব্যাট হাতে কিছু স্মরণীয় করে যেতে পারবেন? বিশেষ করে মাহমুদউল্লাহ যেহেতু মাত্র এক ম্যাচ খেলেছেন এবং তাতেও ব্যর্থ হয়েছেন, তাই তার সামনে আরেকটি সুযোগ থাকছে নিজেকে প্রমাণের।
বৃষ্টি বাধা না হলে কেমন হতে পারে ম্যাচ?
রাওয়ালপিন্ডির কন্ডিশন স্পিনারদের সহায়ক হতে পারে। বাংলাদেশের মেহেদী হাসান মিরাজ ও রিশাদ হোসেন বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। অন্যদিকে পাকিস্তানের আবরার আহমেদ ইতোমধ্যেই দেখিয়েছেন তিনি উইকেট নিতে সক্ষম। তবে পেসারদেরও কাজে লাগতে হবে—বাংলাদেশের জন্য তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা বড় ভরসা, আর পাকিস্তানের পক্ষে নাসিম শাহ হতে পারেন ত্রাতা।
তবে সব পরিকল্পনা বৃথা যাবে যদি বৃষ্টিই ম্যাচ গিলে নেয়। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ হয়তো চাইবে অন্তত সংক্ষিপ্ত ওভারের ম্যাচ হলেও হোক, যাতে শেষবারের মতো নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের সুযোগ থাকে।
শেষ পর্যন্ত, দুই দল কি মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে নামতে পারবে? নাকি রাওয়ালপিন্ডির আকাশই লিখে দেবে বিদায়ের গল্প? অপেক্ষা ২৭ ফেব্রুয়ারির!