ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সফল লেফট-ব্যাক হিসেবে পরিচিত মার্সেলো অবশেষে বুটজোড়া তুলে রাখার ঘোষণা দিলেন। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক আবেগঘন ভিডিওতে ৩৬ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান তারকা আনুষ্ঠানিকভাবে তার ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টানার কথা জানান।
‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমার অধ্যায় এখানেই শেষ, তবে ফুটবলের জন্য আমার এখনো অনেক কিছু দেওয়ার বাকি,’—বলেছেন মার্সেলো, যেখানে তার ক্যারিয়ারের উজ্জ্বল মুহূর্তগুলোর ভিডিও সংযোজিত ছিল।
মার্সেলোর ফুটবল যাত্রা ট্রফির ঝলকানিতে মোড়ানো। দীর্ঘ ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি পাঁচটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, ছয়টি লা লিগাসহ অসংখ্য শিরোপা জিতেছেন। ২০০৭ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে ফ্লুমিনেন্স থেকে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন তিনি। এরপর ১৫ বছরেরও বেশি সময় কাটিয়ে ২০২২ সালে ক্লাবটি ছেড়ে যান। বিদায় নেওয়ার সময় তিনি ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে সর্বাধিক ট্রফিজয়ী খেলোয়াড়, যদিও পরবর্তীতে নাচো, মদ্রিচ ও কারভাহাল তার রেকর্ড ভেঙেছেন।
মার্সেলোর শেষ ম্যাচ ছিল ২০২২ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল, যেখানে রিয়াল মাদ্রিদ লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে।
রিয়াল ছাড়ার পর স্বল্প সময়ের জন্য গ্রিসের ক্লাব অলিম্পিয়াকোসে খেলেন তিনি, এরপর ২০২৩ সালে নিজ দেশ ব্রাজিলে ফিরে আসেন এবং ফ্লুমিনেন্সকে কোপা লিবার্তাদোরেস শিরোপা জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তবে ক্লাবটির সঙ্গে তার শেষ অধ্যায় ছিল কিছুটা অম্ল-মধুর। ২০২৪ সালের নভেম্বরে কোচ মানো মেনেজেসের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে ফ্লুমিনেন্স ছাড়েন তিনি।
মার্সেলোর অবসরের খবরে আবেগাপ্লুত রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ বলেন, ‘তিনি শুধু রিয়ালের নয়, বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা লেফট-ব্যাক। আমরা দীর্ঘ সময় তার অসাধারণ খেলা উপভোগ করেছি। রিয়াল মাদ্রিদ চিরকাল তার ঘর থাকবে।’
ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে ৫৮ ম্যাচ খেলা মার্সেলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় কোনো শিরোপা জিততে পারেননি। তবে ২০১৩ সালে ফিফা কনফেডারেশনস কাপ, ২০০৮ অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ এবং ২০১২ অলিম্পিকে রুপার পদক জেতেন তিনি।
একটি মহাকাব্যিক ফুটবল ক্যারিয়ারের সমাপ্তি হলো। মাঠের গতি, প্রতিপক্ষকে বোকা বানানো ড্রিবল কিংবা হাসিমুখে ট্রফি উঁচিয়ে ধরার দৃশ্য হয়তো আর দেখা যাবে না, কিন্তু মার্সেলোর নাম ফুটবল ইতিহাসে চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।