গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর লাগাতার হামলায় শিশু, নারীসহ অসংখ্য নিরীহ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারাচ্ছেন। মানবিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত এই অঞ্চলের মানুষদের পাশে দাঁড়াতে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ ও সংহতির ঢল। সেই মানবিক অবস্থানে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটাররাও।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ও দোয়ার বার্তা জানিয়ে একে একে মুখ খুলছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। তাসকিন আহমেদ, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নুরুল হাসান সোহান, শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানা—ফেসবুক বা এক্সে তাদের পোস্টে উঠে এসেছে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
জাতীয় দলের পেসার তাসকিন আহমেদ একটি পোস্টারে “ফ্রি প্যালেস্টাইন” বার্তা যুক্ত করে লিখেছেন, ‘একজন মানুষ ও মুসলমান হিসেবে আমি ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পাশে আছি। শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবতার জয় হোক—এই প্রার্থনা।’
অন্যদিকে, অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ফিলিস্তিনের পতাকা যুক্ত করে একটি আবেগময় দোয়া পোস্ট করেন: ‘হে আল্লাহ, পৃথিবীর সব নির্যাতিতদের সাহায্য করুন। আপনি হোন তাঁদের রক্ষক, সাহায্যকারী এবং শক্তির উৎস।’
সম্প্রতি ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানানো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও ফিলিস্তিনিদের জন্য আল্লাহর করুণা কামনা করে লিখেছেন: ‘ইয়া আল্লাহ, দয়া করে সাহায্য করুন। আপনি আমাদের রক্ষক। আপনি তাঁদের রক্ষা করুন এবং বিজয় দিন। আমিন।’
জাতীয় দলের আরেক ক্রিকেটার নুরুল হাসান সোহান সরাসরি এক রাজনৈতিক বার্তা দিয়ে লিখেছেন, ‘ফিলিস্তিন যতদিন মুক্ত না হয়, আমাদের স্বাধীনতাও অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।’
পেসার শরিফুল ইসলাম তুলে এনেছেন পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত: ‘যে ব্যক্তি একটি নির্দোষ মানুষকে হত্যা করে, সে যেন গোটা মানবজাতিকে হত্যা করলো।’ (সূরা মায়িদা: ৩২)। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ফিলিস্তিনে নিরীহ মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। তারা আমাদের ভাই, আমাদের আত্মীয়। দোয়া করুন, প্রতিবাদে গর্জে উঠুন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে থাকুন।’
নতুন প্রজন্মের পেসার নাহিদ রানা লিখেছেন, ‘এই নিষ্ঠুরতার ভার আমাদের সবার উপর। একদিন সবাইকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’ তিনি ইসরায়েলি নিপীড়নের ভিন্ন ভিন্ন ছবি পোস্ট করে ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্যমতে, গত ২০ দিনের ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত শিশুদের সংখ্যা ৪৯০ ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ ১৮ মাসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি। এই বীভৎসতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, তুরস্ক, মরক্কোসহ বহু দেশে প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধন চলছে। ঢাকাতেও ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ মানুষ।