বিপিএলটা শেষ হলেই বাঁচে—এমন ভাবনা এখন বিসিবির। শুরু থেকে একের পর এক বিতর্ককে সঙ্গী করে চলছে দেশের সবচেয়ে বড় এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। টুর্নামেন্টের প্রায় শেষ দিকে এসেও বিতর্ক যেন ছাড়ছেই না। এবারের আসরে অংশ নেওয়া কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটারদের ঠিকঠাক পারিশ্রমিক মেটায়নি। দৈনিক ভাতা, ভালোমানের হোটেল সুবিধাসহ নানা সমস্যা্ও এসেছে সামনে। দেশি থেকে বিদেশি—সবাই একই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ড বিপিএলের আগের দশ আসরকেও যেন ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি ক্রিকেটারদের জন্যও হতাশার। দিন শেষে টাকার জন্যই খেলে থাকেন তারা। খুলনা টাইগার্স অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও বললেন, এমন নেতিবাচক ঘটনায় মন খারাপ হয় তারও। তবুও তিনি আশাবাদী। সবকিছুর সমাধান করবে ক্রিকেট বোর্ড—এমনই প্রত্যাশা তার।
পারিশ্রমিক ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে দুর্বার রাজশাহী দলের খেলোয়াড়রা। গণমাধ্যমেও প্রতিদিন নেতিবাচক শিরোনাম হচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিকরা। একের পর এক আশ্চার্যজনক ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে তারা। আজও যেমন টিম হোটেল ছেড়ে নিজ নিজ বাসায় চলে গেছেন তাদের বেশিরভাগ ক্রিকেটার। যদিও ফ্র্যাঞ্চাইজির দাবি, খেলোয়াড়দের চাওয়াতেই এমন সুবিধা দেওয়া। কিন্তু আর্থিক কারণে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে নেতিবাচক শিরোনাম হওয়া দলটির এখন ইতিবাচক বলতেও যে কিছু আর নেই; সেটাও স্পষ্ট।
নেতিবাচক শিরোনামে আছে লম্বা সময় পর বিপিএলে ফেরা চিটাগং কিংসের নামও। এসব দেখে কেমন লাগে মিরাজদের! এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ অলরাউন্ডার বলেন, ‘অবশ্যই এটা খারাপ লাগছে। আমরা খেলোয়াড়রা ক্রিকেট খেলি টাকার জন্য। দিনশেষে যদি পারিশ্রমিক না পাই, প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের জন্যই খারাপ। সবাই একটা দিক থেকে আশা করবে অবশ্যই যেহেতু ক্রিকেট বোর্ড আমাদের অভিভাবক, ক্রিকেট বোর্ড অবশ্যই এটার ব্যাপারে কথা বলবে।’
বিপিএলের নিয়ম অনুযায়ী, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ৫০ শতাংশ, মাঝে ২৫ শতাংশ ও শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে আরও ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক মেটানোর কথা ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর। কিন্তু প্রায় শেষ দিকে এসেও অনেক ক্রিকেটারই ৫০ শতাংশ পারিশ্রমিক বুঝে পায়নি। খুলনা টাইগার্সও গতকাল পর্যন্ত দিয়েছিল ৪০ শতাংশ পারিশ্রমিক। এখনো তাদের চুক্তি অনুযায়ী আরও ৩৫ শতাংশ বাকি। তবে গেল কয়েক বছর বিষয়গুলো দারুণভাবে সামলানো দলটিকে ঘিরে শঙ্কা নেই ক্রিকেটারদের। মিরাজের কথায় সেটার প্রমাণ মেলে, ‘আমাদের টিমে ইতোমধ্যে ৪০ শতাংশ পেমেন্ট করে দিয়েছে। আর আমার সঙ্গে ইকবাল ভাইয়ের (ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক) কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, এই সপ্তাহের ভেতর ৩০-৩৫ শতাংশ পেমেন্ট করে দেবেন। অলমোস্ট তো ৭০ শতাংশের কাছাকাছি আমরা সবাই পেয়ে যাবো।’ মিরাজদের সমস্যা না হলেও অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেলা ক্রিকেটারদের জন্য এটাই বড় দুশ্চিন্তার কারণ। রুটিরুজির জায়গা বলে কথা।
মিরাজ আশাবাদী বিসিবিই দেবে সমাধান, ‘এখানে যারা দায়িত্বে আছে—বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল, তারা এটা নিয়ে কাজ করবে। আশা করি তারা সুন্দর, ভালো একটা সমাধান দেবে। তারা অবশ্যই খেলোয়াড়দের সঙ্গে থাকবে সবসময় আমার কাছে মনে হয়।’
এমন একটা টুর্নামেন্টে এত এত নেতিবাচক ঘটনা বিদেশিদের কাছেও দেশের ইমেজ নষ্ট করে কি না! এমন প্রশ্নে মিরাজ বললেন, ‘অবশ্যই খারাপ বিষয়।’