ম্যানচেস্টার সিটি অবশেষে তাদের ইউরোপীয় অভিযানকে বাঁচিয়ে রাখল! ক্লাব ব্রুগের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৩-১ গোলের নাটকীয় জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে-অফ নকআউট রাউন্ড নিশ্চিত করল পেপ গার্দিওলার দল। বাঁচা-মরার ম্যাচে ঠিকই জয় আনতে পেরেছে ডি-ব্রুইনা-হলান্ডরা।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ইতিহাদ স্টেডিয়ামে শুরুটা ছিল হতাশাজনক। প্রথমার্ধে বলের দখল রাখলেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না সিটি। বরং প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে ব্রুগের রাফায়েল ওনিয়েদিকা গোল করে স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে দেন। তবে দ্বিতীয়ার্ধে রূপকথার মতোই ফিরে আসে সাবেক ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা।
৫৩ মিনিটে মাতেও কোভাচিচ দুর্দান্ত এক একক প্রচেষ্টায় সমতা ফেরান। এরপর সাভিনহোর চমৎকার ড্রিবলিংয়ে বাঁ দিক থেকে জসকো গার্দিওলের পাস প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যায়। ৭৭ মিনিটে ম্যাচের নায়ক সাভিনহো নিজেই স্কোরশিটে নাম তুললে স্বস্তির জয় নিশ্চিত হয় সিটির।
এই জয়ের ফলে টানা ১৫ মৌসুম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম পর্ব পেরোনোর গার্দিওলার রেকর্ড অক্ষত থাকল। যদিও এবার গ্রুপ পর্বে সিটির পারফরম্যান্স ছিল অপ্রত্যাশিত। স্পোর্টিং সিপির কাছে ৪-১ গোলে হারের পর, ফেয়েনর্ডের বিপক্ষে তিন গোলের লিড হারানো, জুভেন্টাসের বিপক্ষে ২-০ গোলে পরাজয় এবং সর্বশেষ পিএসজির বিপক্ষে ৪ গোল হজম করে দলটি বড় বিপদে পড়েছিল। তবে শেষ মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়িয়ে তারা প্লে-অফ নিশ্চিত করল।
এদিকে, লিভারপুল শেষ ম্যাচে পিএসভির কাছে ৩-২ গোলে হেরেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লিগ পর্বের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করেছে। বার্সেলোনা যদি আটালান্টার বিপক্ষে জিততে পারত, তাহলে তারা শীর্ষস্থান দখল করত, কিন্তু ম্যাচটি ড্র হওয়ায় লিভারপুলই এগিয়ে থাকল।
আর্সেনাল ও অ্যাস্টন ভিলা নিজেদের ম্যাচ জিতে সরাসরি শেষ ষোলোতে চলে গেছে। অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদও একই পথ অনুসরণ করেছে। ইন্টার মিলানের হয়ে লাউতারো মার্টিনেজ দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক করেন মোনাকোর বিপক্ষে।
অন্যদিকে, রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখ তাদের শেষ ম্যাচে যথাক্রমে ব্রেস্ট ও স্লোভান ব্রাতিস্লাভাকে হারিয়েছে। তবে সিটির মতো তাদেরও প্লে-অফ রাউন্ড খেলতে হবে, কারণ তারা মৌসুমের শুরুতে ধাক্কা খেয়েছিল।
আগামী শুক্রবার হবে প্লে-অফের ড্র, যেখানে ম্যানচেস্টার সিটি, রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখের মতো হেভিওয়েট দলগুলোর ভাগ্য নির্ধারণ হবে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লিগ পর্ব শেষে শীর্ষ ২৪ দলের তালিকা নিম্নরূপ:
শীর্ষ ৮ দল (সরাসরি রাউন্ড অব ১৬-তে প্রস্থান):
লিভারপুল – ২১ পয়েন্ট
বার্সেলোনা – ১৯ পয়েন্ট
আর্সেনাল – ১৯ পয়েন্ট
ইন্টার মিলান – ১৯ পয়েন্ট
অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ – ১৮ পয়েন্ট
বায়ার লেভারকুসেন – ১৬ পয়েন্ট
লিল – ১৬ পয়েন্ট
অ্যাস্টন ভিলা – ১৬ পয়েন্ট
পরবর্তী ১৬ দল (প্লে-অফ রাউন্ডে অংশগ্রহণ করবে):
আটালান্টা – ১৫ পয়েন্ট
বরুশিয়া ডর্টমুন্ড – ১৫ পয়েন্ট
রিয়াল মাদ্রিদ – ১৫ পয়েন্ট
বায়ার্ন মিউনিখ – ১৫ পয়েন্ট
এসি মিলান – ১৫ পয়েন্ট
পিএসভি- ১৪ পয়েন্ট
প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি) – ১৩ পয়েন্ট
বেনফিকা – ১৩ পয়েন্ট
মোনাকো – ১৩ পয়েন্ট
ব্রেস্ট – ১৩ পয়েন্ট
ফাইনর্ড – ১৩ পয়েন্ট
জুভেন্টাস – ১২ পয়েন্ট
সেল্টিক – ১২ পয়েন্ট
ম্যানচেস্টার সিটি – ১১ পয়েন্ট
স্পোর্টিং – ১১ পয়েন্ট
ক্লাব ব্রুগে – ১১ পয়েন্ট
এই তালিকা অনুযায়ী, শীর্ষ ৮ দল সরাসরি রাউন্ড অব ১৬-তে প্রস্থান করবে, এবং পরবর্তী ১৬ দল প্লে-অফ রাউন্ডে অংশগ্রহণ করবে।