আসর শুরুর আগেই এবারের বিপিএলের সবথেকে ফেভারিট বলে ভাবা হচ্ছিল তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশালকে। লিগ পর্বে তিন ম্যাচ হেরে সেই ফেভারিট তকমাকে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। তবে টুর্নামেন্টের পরের ধাপেই ফর্ম ফিরে পায় তামিমের দল। আর সেই ফর্ম তাদের থাকল একেবারে ফাইনাল পর্যন্ত। ফাইনালে বন্দরনগরীর দল চিটাগং কিংসকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতেছে ফরচুন বরিশাল।
শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) বিপিএলের ফাইনাল ম্যাচে চিটাগং কিংসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছে তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল।
শেষ বল পর্যন্ত উত্তেজনায় ঠাসা ফাইনালে ফরচুন বরিশাল অবশেষে জিতে নিল বিপিএল ২০২৫-এর শিরোপা! মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেষ ওভারের রোমাঞ্চে তিন বল হাতে রেখেই জয় ছিনিয়ে নেয় তামিম ইকবালের দল। চট্টগ্রাম কিংসের ব্যাটিং তাণ্ডবের পর শরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিং বরিশালকে আটকাতে পারেনি।
ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিল চট্টগ্রাম কিংস। খাজা নাফায় ও পারভেজ ইমন মিলে গড়ে তোলেন ১২১ রানের দুর্দান্ত জুটি। নাফায় ৪৪ বলে ৬৬ রান করে ফিরলেও ইমন ছিলেন আরও বিধ্বংসী। মাত্র ৪৯ বলে ৭৮ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। শেষদিকে গ্রাহাম ক্লার্ক ২৩ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন, ফলে চট্টগ্রাম ২০ ওভারে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে।
বরিশালের বোলিং আক্রমণ ছিল তুলনামূলক দুর্বল। মোহাম্মদ আলী ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন, আর ইবাদত হোসেন ৩৫ রান খরচায় পান ১ উইকেট। তবে তানভীর ইসলাম (২ ওভারে ৪০ রান) এবং রিশাদ হোসেন (২ ওভারে ২৬ রান) ছিলেন বেশ ব্যয়বহুল।
১৯৫ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে বরিশাল। তামিম ইকবাল শুরু থেকেই ঝড় তোলেন, মাত্র ২৯ বলে ৫৪ রান করেন ৯টি চার ও ১টি ছক্কায়। তবে শরিফুল ইসলামের করা ৯ম ওভারে এক ওভারে দুটি উইকেট পড়ে গেলে ম্যাচ জমে ওঠে।
এরপর দায়িত্ব নেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্স। ২৮ বলে ৪৬ রান করে তিনি বরিশালকে জয়ের পথে রাখেন। তবে শেষদিকে দ্রুত কিছু উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলে চট্টগ্রাম কিংস। ১৯তম ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ নবী ফিরে গেলে শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান।
রিশাদ হোসেন ৬ বলে ১৮ রানের এক ঝোড়ো ইনিংস খেলে দলকে জয় এনে দেন। ১৯.৩ ওভারে বরিশাল ১৯৫ রান তুলে ৩ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে।
এই জয়ে বিপিএলে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে চ্যাম্পিয়ন হলো ফরচুন বরিশাল। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন। অন্যদিকে, শরিফুল ইসলামের ৪ উইকেট (৪-০-৩৪-৪) সত্ত্বেও চট্টগ্রাম শেষ পর্যন্ত হার মানে।
বিপিএল ২০২৫-এর এই ফাইনাল যেমন ছিল উত্তেজনায় ঠাসা, তেমনি এটি মনে থাকবে রিশাদ হোসেনের সাহসী ফিনিশিংয়ের জন্যও।