চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নিত্যপণ্যের সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট প্রতিরোধে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। এই নির্দেশনা অনুযায়ী, বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে আমদানি করা পণ্য লাইটার জাহাজে লোড হওয়ার পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দর সীমানা ত্যাগ করতে হবে। জনস্বার্থে এবং পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বন্দরসংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে আমদানি হওয়া অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বড় জাহাজ থেকে লাইটার জাহাজে খালাস করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু কিছু অসাধু আমদানিকারক লাইটার জাহাজগুলোকে ভাসমান গুদাম হিসেবে ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে সাগরে আটকে রাখেন। এতে বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি হয় এবং মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা দেখা দেয়। নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে এই সমস্যা অনেকাংশে দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাজারে কৃত্রিম সংকট যেন তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। লাইটার জাহাজগুলোকে পণ্য লোড হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দর ত্যাগ করতে হবে। তা না হলে চট্টগ্রাম বন্দর আইন এবং আন্তর্জাতিক বন্দর ও জাহাজ সুবিধা (আইএসপিএস) কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি কনজারভেটরের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য বোঝাই করার পর লাইটার জাহাজগুলো অনর্থক দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করে। এর ফলে পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হয়, বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখা দেয় এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। এটি জনস্বার্থবিরোধী ও রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষতিকর।
এ বিষয়ে আগ্রাবাদের এক ব্যবসায়ী ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সদস্য মো. ইসমাইল খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সময়োপযোগী। এটি কার্যকর হলে পণ্যের সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকবে এবং বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বন্দরের কার্যক্রমকে আরও স্বচ্ছ ও গতিশীল করার জন্য এমন নীতিগত পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে রমজান মাসে বাজার ব্যবস্থাপনা যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, তা নিশ্চিত করতে কঠোরভাবে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি ও দ্রুত পদক্ষেপের মাধ্যমে নীতিটি কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হলে বাজারে স্বাভাবিকতা বজায় থাকবে এবং সাধারণ ভোক্তারাও উপকৃত হবেন।