Homeঅর্থনীতি১০ লাখের আমানতে শুল্ক নয়

১০ লাখের আমানতে শুল্ক নয়


দেশে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এ বিষয়ে ভিন্ন বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ‘চলতি করবর্ষে অনলাইনে জমা দেওয়া ১৫ লাখ আয়কর বিবরণীর মধ্যে ১০ লাখই ছিল শূন্য রিটার্ন, অর্থাৎ এসব করদাতার আয় সাড়ে তিন লাখ টাকার নিচে থাকায় তাঁদের কর দিতে হয়নি। এ থেকে স্পষ্ট, আমরা এখনো প্রকৃত করদাতাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারছি না।’ বিষয়টি বিবেচনার সুযোগ থাকলেও এতে শূন্য রিটার্নধারীর সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

গতকাল ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রাক্-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠানে এভাবেই দ্বিমুখী মতামত উঠে আসে। এনবিআর আয়োজিত এ আলোচনায় ইআরএফ আগামী বাজেটে বিবেচনার জন্য ৩৫টি সুপারিশ উপস্থাপন করে।

এ সময় সংগঠনের সভাপতি দৌলত আকতার মালা ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকায় উন্নীত করলে মূল্যস্ফীতির এই সময়ে কিছু করদাতা স্বস্তি বোধ করবেন। পাশাপাশি ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংকে আমানত জমার ওপর আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার এবং মুনাফার ওপর কর কমানো হলে ব্যাংকে আমানত রাখার ওপর মানুষের আস্থা বাড়বে এবং আগ্রহ তৈরি হবে। জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বিষয়গুলো বিবেচনার আশ্বাস দেন।

প্রাক্-বাজেট আলোচনায় নিম্নবিত্তের করের বোঝা কমানোর আহ্বান জানিয়ে ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা বলেন, মধ্যবিত্ত ও দরিদ্রদের ওপর করের চাপ কমাতে বাজেটে বিশেষ পদক্ষেপ প্রয়োজন। তিনি প্রস্তাব করেন, যাঁদের করযোগ্য আয় নেই, তাঁদের ব্যাংক সুদের ওপর কেটে নেওয়া কর মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবস্থার মাধ্যমে ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

দৌলত আকতার মালা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসা উপকরণে করহার ৫ শতাংশে সীমিত রাখা; ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশে পৃথক রাজস্ব নীতির মাধ্যমে বন্ড সুবিধা সহজ করা; বাজেটে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব পরিকল্পনার বরাদ্দ রাখা এবং বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ড করমুক্ত করার প্রস্তাব দেন। করপোরেট কোম্পানির রিটার্ন জমার হার কম থাকার কারণ খতিয়ে দেখতে এনবিআর-ইআরএফ যৌথ জরিপ চালুর সুপারিশও করেন। পাশাপাশি প্রান্তিক করদাতাদের জন্য বিশেষ ডিজিটাল সেবা চালু ও তামাকের কর বৃদ্ধির প্রস্তাবও দেন।

ইআরএফ সভাপতি ব্যক্তি করদাতাদের সর্বোচ্চ করহার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ নির্ধারণের পক্ষে মত দিয়ে বলেন, এতে করদাতারা নিরুৎসাহিত না হয়ে বরং কর ব্যবস্থার প্রতি আস্থা বাড়াবেন। পাশাপাশি ভ্যাট কাঠামো সহজ করতে বিদ্যমান বিভিন্ন হারের পরিবর্তে একক হার ৭ শতাংশ করার পরামর্শ দেন, যা হিসাব ও আদায়প্রক্রিয়ার জটিলতা ও বৈষম্য কমাবে।

রাজস্ব বাড়ানোর বিকল্প উপায় তুলে ধরে দৌলত আকতার মালা বলেন, বাজার মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পদ কর আদায় করা হলে অপ্রদর্শিত সম্পদ থেকে রাজস্ব আহরণ সম্ভব হবে। পাশাপাশি পত্রিকা, টেলিভিশন, অনলাইনসহ গণমাধ্যমের করহার কমানোরও সুপারিশ করেন তিনি। এনবিআরের আয়োজিত এই আলোচনায় বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত