প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর অর্থ ব্যবহারে সিকিউরিটিজ আইন ভেঙেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এ ছাড়া কোম্পানির কার্যক্রম, মুনাফা ও লভ্যাংশ বিতরণ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। এমতাবস্থায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় কোম্পানির ৪ বছরের আর্থিক প্রতিবেদনসহ ১৫টি বিষয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ জন্য সম্প্রতি তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
কমিটিতে রয়েছেন উপপরিচালক মো. মওদুদ মোমেন, সহকারী পরিচালক তন্ময় কুমার ঘোষ ও মো. মারুফ হাসান। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির ইন্সপেকশন, এনকোয়ারি অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের পরিচালক মাহমুদুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষা প্রতিবেদনে অসংগতিসহ সিলভা ফার্মার নানা বিষয়ে মানুষের মধ্যে থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন আসছে, এ জন্য সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখতে কমিটি করা হয়েছে।
২০১৮ সালে আইপিওর মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি, যা ২০২০ সালের মধ্যে ব্যয়ের কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ে টাকা ব্যয় করতে না পেরে ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চার দফা সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ পঞ্চম দফায় আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি শেষে অব্যবহৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৮১ লাখ ৫২ হাজার ৬৩৮ টাকা।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট শেষে আইপিও তহবিলের ৫ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৯২৯ টাকা শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের সাতমসজিদ রোড শাখায় এফডিআর হিসেবে গচ্ছিত ছিল। ২০২৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বরে আইপিওর অব্যবহৃত তহবিলের সুদ থেকে ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৯২৯ টাকা একই ব্যাংকের সিডি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছে কোম্পানিটি। যথাযথ কর্তৃপক্ষের সম্মতি ছাড়া এ ধরনের অর্থ স্থানান্তর সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন বলে ধরা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক পারফরম্যান্সেও পিছিয়ে রয়েছে সিলভা ফার্মা। ২০২৪ সালে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ৪৭ পয়সা লোকসান করেছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য গত দুই বছর ধরে কেবল ১ শতাংশ হারে নামমাত্র লভ্যাংশ দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, সম্পদ ও দায় এবং আইপিও তহবিল ব্যবহারের স্বচ্ছতা যাচাই করতে বলেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।