Homeঅর্থনীতিসিইও ছাড়াই ৪ বছর ধরে চলছে গার্ডিয়ান লাইফ

সিইও ছাড়াই ৪ বছর ধরে চলছে গার্ডিয়ান লাইফ


গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড দেশের একটি সুপরিচিত বিমা প্রতিষ্ঠান, সম্প্রতি বিমা কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য সমালোচিত হয়েছে। প্রায় চার বছর ধরে সিইও (মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা) ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে সিইও পদটি শূন্য, যা বিমা আইন, ২০১০-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই আইনের ৮০ ধারা অনুযায়ী, কোনো বিমা কোম্পানিকে তিন মাসের মধ্যে সিইও নিয়োগ করতে হবে। যদি বিশেষ কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিয়োগ সম্ভব না হয়, তবে আরও তিন মাস সময় দেওয়া হয়। তবে, ছয় মাসের বেশি সিইও পদটি খালি রাখা যাবে না। কিন্তু গার্ডিয়ান লাইফ এই নিয়ম অনুসরণ না করে দীর্ঘদিন সিইও নিয়োগে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, ফলে এটি আইনের লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্সকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন সিইও নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে আইন লঙ্ঘনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির ওপর ৫ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করেছে।

আইডিআরএ সূত্রমতে, গার্ডিয়ান লাইফের শেষ সিইও ছিলেন এম এম মনিরুল আলম, যিনি ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। এরপর এখন পর্যন্ত নতুন সিইও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে সিএফও শেখ রাকিবুল করিম ভারপ্রাপ্ত সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে আইডিআরএর পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে জানান, ২০২১ সাল থেকে সিইও পদটি শূন্য থাকার কারণে এই জরিমানা করা হয়েছে। আইডিআরএ তাদের ১৭৮তম সভায় গার্ডিয়ান লাইফকে এই জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ১৫ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করার জন্য নির্দেশনা দেয়।

জানা গেছে, ২৭ জানুয়ারি আইডিআরএর পরিচালক সালেহীন তানভীর গাজী স্বাক্ষরিত এক চিঠি গার্ডিয়ান লাইফের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, গার্ডিয়ান লাইফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সিইও নিয়োগের জন্য কোম্পানি বহুবার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছে, তবে উপযুক্ত ব্যক্তি খুঁজে না পাওয়ার কারণে তারা সিইও নিয়োগ করতে সক্ষম হয়নি। তারা আরও বলেছে, এই বিষয়টি আইডিআরএকে জানানো হবে এবং জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন করা হবে।

এ ছাড়া, গার্ডিয়ান লাইফের গ্রাহকেরা তাঁদের বিমা দাবি পরিশোধে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আইডিআরএর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানির কাছে মোট বিমা দাবি ছিল ১১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার ৯০৫ টাকা, যার মধ্যে ১০৫ কোটি ৭৩ লাখ ৬৯ হাজার ৭৬০ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তবে, এখনো বাকি রয়েছে ৭ কোটি ৬৮ লাখ ১১ হাজার ১৪৫ টাকা। এই বকেয়া পরিমাণটি গ্রাহকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং কোম্পানির জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানি একাধিকবার সিইও নিয়োগের জন্য চেষ্টা করলেও যোগ্য ব্যক্তি না পাওয়ার ফলে তারা আইন অনুযায়ী নিয়োগ দিতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে আইডিআরএর কঠোর পদক্ষেপ এবং জরিমানা কোম্পানির জন্য একটি সতর্কসংকেত হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভবিষ্যতে তারা বিষয়টি সমাধান করতে না পারলে আরও বড় সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে গ্রাহকদের বিমা দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত