মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ব্যাপক শাস্তিমূলক শুল্কের জেরে বাণিজ্য আলোচনার জন্য সরাসরি হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ৫০ টিরও বেশি দেশ। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল–জাজিরা।
ট্রাম্পের এই শুল্ক পরিকল্পনার কারণে গত সপ্তাহে মার্কিন শেয়ারবাজার থেকে প্রায় ৬ ট্রিলিয়ন ডলার উধাও হয়ে গেছে। এটি বিশ্ববাজারকে বিপর্যস্ত করেছে এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা তৈরি করেছে। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন এটিকে আমেরিকান অর্থনীতির জন্য বড় সুযোগ হিসেবে প্রচার করছে।
গতকাল রোববার সকালে একটি টিভি অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টারা শুল্ক নীতিকে সমর্থন করে বলেন, বিশ্ব বাণিজ্যে মার্কিন অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য এটি একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।
ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, গত বুধবার এই শুল্ক নীতি ঘোষণার পর থেকে ৫০ টিরও বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। দেশগুলোর নাম প্রকাশ করেননি তিনি।
বেসেন্ট দাবি করেছেন, এই শুল্ক নীতি ট্রাম্পকে ‘সর্বোচ্চ সুবিধা’ দিয়েছে, যদিও মার্কিন অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব অনিশ্চিত রয়ে গেছে। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে মন্দার উদ্বেগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
ট্রাম্পের নতুন শুল্ক গত শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। আর পাল্টা শুল্ক আগামী বুধবার থেকে কার্যকর করার কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০ শতাংশ ‘বেসলাইন’ শুল্ক মার্কিন সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর এবং কাস্টমস গোডাউনগুলোতে কার্যকর হয়েছে। এর মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ–পরবর্তী ব্যবস্থাকে ট্রাম্প সম্পূর্ণ বাতিল করার সূচনা করলেন।
অর্থনীতিবিদেরা সতর্ক করেছেন, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি মার্কিন মোট দেশীয় উৎপাদনে (জিডিপি) পতন ঘটাতে পারে ১ জেপি মরগানের অর্থনীতিবিদেরা তাঁদের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন।
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ছাড় আদায় করতে চাপ দেওয়ার লক্ষ্যে আরোপিত শুল্ক নীতি এরই মধ্যে প্রতিশোধমূলক শুল্কের মতো ঘটনারও সূচনা করেছে। চীন এরই মধ্যে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেছে। ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে।
মার্কিন মিত্র যেমন তাইওয়ান, ইসরায়েল, ভারত এবং ইতালি ইতিমধ্যে শুল্ক এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তাইওয়ানের নেতা লাই চিং-তে আলোচনার ভিত্তি হিসেবে শূন্য শুল্কের প্রস্তাব দিয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইসরায়েলি পণ্যের ওপর ১৭ শতাংশ শুল্ক থেকে রেয়াত চেয়েছেন।