দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একক মাসে প্রবাসী আয় ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার তথ্য রবিবার (৫ এপ্রিল) দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। একদিন পর রফতানি আয়ে উল্লম্ফনের তথ্য জানালো রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায়ী মার্চ মাসে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার, যা এখনও পর্যন্ত একক মাসে রেমিট্যান্স আয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড। ইপিবির তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.২৫ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১.৪৪ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাক খাতের ধারাবাহিক শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির ফলে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ইপিবি।
ইপিবির সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই-মার্চ সময়কালে মোট রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩৭.১৯ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ৩৩.৬১ বিলিয়নের তুলনায় ১০.৬৩ শতাংশ বেশি।
এই ৯ মাসে তৈরি পোশাক খাত এককভাবে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলারের রফতানি আয় করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০.৮৪ শতাংশ বেশি। মার্চ মাসেই খাতটি ১২.৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, এতে আয় হয়েছে ৩.৪৫ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের মার্চে এর পরিমাণ ছিল ৩.০৭ বিলিয়ন ডলার।
ইপিবির এক বিবৃতিতে বলা হয়, “তৈরি পোশাক খাতের পাশাপাশি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন খাত থেকেও রফতানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি এসেছে, যা বাংলাদেশের রফতানি বহুমুখীকরণের সম্ভাবনাকে তুলে ধরে।”
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, হোম টেক্সটাইল, বিশেষায়িত টেক্সটাইল এবং নন-লেদার ফুটওয়্যার খাতেও মাঝারি মাত্রার ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। তবে পাট খাত প্রায় স্থবির অবস্থায় রয়েছে এবং কৃষিপণ্যের রফতানি আশঙ্কাজনকভাবে ২৫.৭২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
কৃষিপণ্যকে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে বিবেচনা করে ইপিবি এই খাতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে করে আগামীতে এই খাত আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একক মাসে প্রবাসী আয় ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সদ্য বিদায়ী মার্চ মাসে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার, যা এখন পর্যন্ত একক মাসে রেমিট্যান্স আয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় প্রবাসীরা বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ব্যাংকারদের মতে, অর্থপাচার কমে যাওয়া ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চে প্রবাসী আয় ছিল ৩২৯ কোটি ডলার, যা গত বছরের মার্চে ছিল ১৯৯ কোটি ডলার। এক বছরের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৭৭ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।