পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাকি আছে আর অল্প কিছুদিন। যারা ঢাকার বাইরে ঈদ করতে যাবেন, তারা ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায়। মার্কেটগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। ক্রেতা আকৃষ্ট করতে দোকানিরা নিচ্ছেন নানা কৌশল। কোথাও মূল্য ছাড়, কোথাও একটি কিনলে আরেকটি ফ্রি অফার। ক্রেতারা বলছেন, পণ্যের দাম কিছুটা বেশি। বিক্রেতাদের কেউ বলছেন বিক্রি কম, কেউ বলছেন মোটামুটি। তবে সাধারণ দোকানের চেয়ে ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়।
রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার বিপণিবিতান এবং বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে, কেউবা এসেছেন বন্ধুবান্ধব নিয়ে। সবার মুখেই ঈদকে ঘিরে উচ্ছ্বাস থাকলেও কেউ কেউ কিছুটা উদ্বেগ নিয়ে ঘুরছেন। উদ্বেগটা বাজেটের মধ্যে সাধ্য অনুযায়ী ঈদের পোশাক কেনা নিয়ে।
বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে কেনাকাটা করতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফাহিম হাসান বলেন, ‘ঈদে সবসময় পাঞ্জাবির প্রতি ছেলেদের আকর্ষণ থাকে বেশি। এবার পাঞ্জাবির ডিজাইনগুলো কেমন জানি, আসলে বলে বুঝানো মুশকিল। কয়েক দোকান ঘুরলাম, কিন্তু পছন্দ হলো না একটাও। ইল্লিয়ন, ক্যাটস আই, ইনফিনিটিতে গিয়েছিলাম, সেখানে ভিড় দেখে চলে এসেছি। আরও কয়েকটা দোকান দেখবো, পছন্দ না হলে অন্য মার্কেটে যেতে হবে।’
বেশ কিছুক্ষণ মার্কেট ঘুরে দেখা গেলো, সাধারণ পোশাকের দোকানের চেয়ে ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে ভিড় বেশি। বিশেষ করে ছেলেদের পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে দাঁড়ানোর জায়গা নেই বললেই চলে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাকের দোকানে কথা বলে জানা গেছে, এবারের পাঞ্জাবির ডিজাইনে ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করেছেন ডিজাইনাররা। তবে এবার অন্যান্য রংয়ের পাঞ্জাবির চেয়ে সাদা পাঞ্জাবির কদর বেশি।
বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের একটি ব্র্যান্ডের পাঞ্জাবির দোকানের বিক্রেতা মহসিন বলেন, ‘বিভিন্ন রঙয়ের পাঞ্জাবির কালেকশন আছে আমাদের এখানে। তবে ক্রেতাদের চাহিদার মধ্যে সবার ওপরে আছে সাদা পাঞ্জাবি। এবার হয়তো গরম একটু বেশি পড়বে, সেই চিন্তা করে সাদা পাঞ্জাবির প্রতি আকর্ষণ বেশি হতে পারে। তবে আমাদের এখানে এবার বেশিরভাগই হালকা রংয়ের পাঞ্জাবি রাখা হয়েছে।’
একই শপিং কমপ্লেক্সের অপর এক দোকান মালিক ফয়সালের সঙ্গে কথা হয় কেনাবেচা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘মার্কেটে কাস্টমার আছে প্রচুর। তবে অনেকেই দেখে, দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ অতিরিক্ত দামের কথা বলছেন। কিন্তু আমরা নিরুপায়, কেনা দামই বেশি। তাই এবার এখনও বিক্রি একটু কম। তবে ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে বিক্রি বাড়তে পারে।’
মার্কেটে ঈদের পোশাক কিনতে আসা ফাহাদ বলেন, ‘এবার জামা-কাপড়ের দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। জিন্স, টি শার্ট কেনার দরকার। কিন্তু দামের কারণে এখনও পারিনি।’
ধানমন্ডি এলাকার অন্যান্য মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে বেশ ভিড় আছে। এছাড়া রাপা প্লাজা, জেনেটিক প্লাজার মতো শপিং মলগুলোতেও আছে ক্রেতাদের আনাগোনা। তবে বিক্রি কম বলে জানিয়েছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা।
জেনেটিক প্লাজার ব্যবসায়ী আলীম বলেন, ‘ঈদ ঘিরে যে প্রত্যাশা ছিল, তার চেয়ে কম বিক্রি হচ্ছে। তারপরও যেগুলো বিক্রি হচ্ছে, অল্প লাভে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। কাস্টমার ফিরিয়ে দিয়ে লাভ নাই। সবচেয়ে বড় সমস্যা ক্রেতারা দামাদামি করতে গিয়ে এমন কম দাম বলছে, যেগুলো আমাদের কেনা দামের কম।’