বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধিতে জিনিসপত্রের দাম তেমন বাড়েনি দাবি করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কোন কারণে কর ও ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে তা কিছুদিন পরে জানানো হবে।’
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর কারণে যারা সমালোচনা করছেন, করুন; তাঁদের আটকানোর কিছু নেই। কী পরিপ্রেক্ষিতে এই ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে, তা কিছুদিন পর জানানো হবে।’
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জেটের সময় কর ও ভ্যাটের বিষয়গুলো নির্ধারিত হয়। তখন অনেক কিছুই সমন্বয় করা হবে। ভ্যাট বৃদ্ধির পাশাপাশি কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গত ৯ জানুয়ারি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে অধ্যাদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অবশ্য ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে পরে এলপিজিতে সাড়ে ৭ শতাংশ কমায় এবং অটোমোবাইল খাতে ভ্যাট প্রত্যাহার করে সরকার। এ ছাড়া রেস্তোরাঁসহ কিছু পণ্য ও সেবার ভ্যাট কমানোর কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছে এনবিআর।
এদিকে বাজার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় কৃষি পণ্যে সরকার আপাতত ওএমএস বা উন্মুক্ত বিক্রয় করবে না উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জরুরি পরিস্থিতিতে বিশেষ ওএমএস চালু করা হয়। আপাতত এটা বন্ধ করা হয়েছে। যদি আবার জরুরি হয়, তখন আবার তা চালু করা হবে।
ওএমএসের বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, এত দিন যেভাবে ওএমএস চলেছে, সেভাবে করা যাবে না। সরকার চেষ্টা করছে, দ্রব্যমূল্য আরও কীভাবে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা যায়। চালের মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে তিনি বলেন, সরবরাহ শেষ হওয়ার কথা নয়। এখানে খুচরা বিক্রেতা ও পাইকারি বিক্রেতারা কারসাজি করছেন। অন্যান্য পণ্যের দাম মোটামুটি সহনীয় আছে।
ওএমএসের পণ্য কেনে সাধারণত নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরা, এই পরিস্থিতিতে তা বন্ধ হলে এই মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়বেন কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এসব পণ্য এত ভর্তুকি মূল্যে দেওয়া হয় যে অনেক সামর্থ্যবান মানুষও এসব পণ্য কেনেন।’
সারের দাম বাড়বে বলে আশ্বাস দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এ ছাড়া সরকার সার মজুত করছে। সরকারের হাতে যথেষ্ট মজুত না থাকলে বেসরকারি খাত দাম বাড়িয়ে দেয়। সেটি হতে দেওয়া হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সারের মজুত যদি সরকারের না থাকে, তখন বেসরকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেয়। সার কেনার বিষয়ে আমরা আজকে অনুমোদন দিয়েছি। আর পল্লী বিদ্যুতের কিছু বিষয় ছিল, আমরা অনুমোদন দিয়েছি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ অক্টোবর কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই বিশেষ ওএমএস চালু করেছিল সরকার। ৮ লাখের বেশি মানুষ এই কার্যক্রমে সরাসরি সুবিধাভোগী ছিলেন। বিশেষ ওএমএসের কৃষিপণ্যগুলোর মধ্যে ছিল—৩০ টাকা দরে পাঁচ কেজি আলু, ১৩০ টাকায় এক ডজন ডিম, ৭০ টাকায় এক কেজি পেঁয়াজ, ৫০ টাকায় একটি লাউ।