বে-টার্মিনাল প্রকল্পে আগামী মার্চ মাসে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বে-টার্মিনাল বাংলাদেশের জন্য একটি গেম চেঞ্জার প্রকল্প। এটি নিয়ে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে এবং আশা করছি আগামী মাসের মাঝামাঝি এ প্রকল্পের বিষয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটরিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার উদ্দেশ্য ছিল রমজানে পণ্যের সরবরাহ চেইন নিশ্চিত করা, বাজারে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা, বন্দরের কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখা এবং নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত করা।
রমজানে কৃত্রিম সংকট রোধে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘রমজানে যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে, সেসব পণ্যের পর্যাপ্ত আমদানির তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। আমরা শিডিউলিংয়ের মাধ্যমে বন্দরের পরিবহন আরও গতিশীল করছি। কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়ে আপনারা নজর রাখবেন। আমরা বন্দরের ভেতরে ও বাইরে যানজটমুক্ত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
অপারেশনের গতি বাড়ানো প্রসঙ্গে এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বন্দরের আউটারে জাহাজ রেখে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে, যা আমি বুঝতে পারি না। সকল পণ্যের সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক রাখা, বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং বন্দরের কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে লাইটার জাহাজকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পোর্ট লিমিট ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় চট্টগ্রাম বন্দর আইন ও আইএসপিএস কোড অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বন্দরের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা বন্দরের নিরাপত্তা ও অপারেশনস নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। গতকালও (বুধবার) আমরা কয়েকজন চোরকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। বন্দরে চুরি করা সহজ নয়, তবু কিছু চোর গাড়ির নিচে ঝুলে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে আমরা আন্তর্জাতিক শিপ অ্যান্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিউরিটি কোডের (আইএসপিএস) সঙ্গে আরও কঠোরভাবে মিল রেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’
বন্দরের সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত সরকারের আমলে বন্দর বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ছিল। আমরা সফলভাবে সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছি, যার ফলে বন্দরের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। পাশাপাশি, বন্দরের কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৩ সালের তুলনায় কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে ৩ দশমিক ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বন্দরের কার্যক্রম আরও জনবান্ধব করতে স্বচ্ছতা, ন্যায়বিচার ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’