Homeঅর্থনীতিবাজারে আগুন, ডিম ছাড়াই কেক–পেস্ট্রি বানাচ্ছেন মার্কিন বেকাররা

বাজারে আগুন, ডিম ছাড়াই কেক–পেস্ট্রি বানাচ্ছেন মার্কিন বেকাররা


অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে কয়েক মাস ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের বাজার চড়া। অনেক শপেই এখন একসঙ্গে দুটির বেশি ডিম কিনতে দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ডিম কেনা কমিয়ে দেওয়া বা একেবারেই না খাওয়া থেকে শুরু করে মুরগি ভাড়া নেওয়া—নানা পন্থা অবলম্বন করছেন মার্কিনরা।

সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বেকিং ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িতরা। ডিমের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে গুনতে হচ্ছে লোকসান। এমন পরিস্থিতিতে ডিম ছাড়াই কেক-পেস্ট্রি বানানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা।

তেমনই এক পেস্ট্রি শেফ–এর সঙ্গে কথা বলেছে মার্কিন বার্তা সংস্থা এএফপি। অ্যানি ক্লেমনস নামের ওই শেফ বলেন, ‘ডিম এখন স্বর্ণের মতো দামি। কখনো কল্পনাও করিনি ডিমের মতো একটা খাদ্যপণ্যও বিলাস পণ্য হয়ে উঠবে।’

তিনি জানান, তাঁর দোকানে এখন মাত্র ২৯টি ডিম আছে। বলেন, ‘আগে একটি ডিমের দাম ছিল ৮ সেন্ট। তা এখন হয়ে গেছে ৪৫ সেন্ট! আগের চেয়ে ৫ গুণ বেড়েছে দাম!’

২০২০ সালে কোভিড–১৯ মহামারির সময় চাকরি হারান অ্যানি। তখন চিন্তা করেন নিজের বেকিং দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আয়ের উৎস তৈরি করবেন। সেই চিন্তা থেকেই পেস্ট্রি শপ ‘শাপমানস ডিসি’ চালু করেন। কিন্তু হঠাৎ ডিমের দাম বাড়ায় যেন আবার পেটে লাথি পড়তে যাচ্ছে তাঁর! তাই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ডিমের বিকল্প খুঁজছেন তিনি।

অ্যানি বলেন, ‘কেক–পেস্ট্রি তৈরি থেকে শুরু করে এগুলোর ডেকোরেশনে যেখানে আগে ডিম ব্যবহার করতাম, এখন সব জায়গায় ডিমের বিকল্প খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। বেশ কিছু ক্ষেত্রে ডিমের বদলে অন্য উপাদান ব্যবহার করে স্বাদ অপরিবর্তিত রাখা যায়। যেমন, কাস্টার্ডের ক্ষেত্রে কর্ন স্টার্চ ব্যবহার করি। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার ডিম ছাড়া চলেই না। সেসব ক্ষেত্রে তো এটি ব্যবহার করতেই হয়। তাই খুব হিসাব করে ডিম ব্যবহার করি।’

দীর্ঘশ্বাস ফেলে অ্যানি বলেন, ‘আবার যে কবে নির্দ্বিধায় ডিম ব্যবহার করতে পারব জানি না।’

যদিও মার্কিন প্রশাসনের দাবি—গত তিন সপ্তাহে পাইকারি বাজারে ডিমের দাম কমেছে। মার্কিন কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, উচ্চ মূল্যের কারণে ডিমের চাহিদা কিছুটা কমায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে। পাশাপাশি বার্ড ফ্লুর সংক্রমণও কিছুটা কমেছে। তবে, খুচরা মূল্য এখনো কমেনি বলেই জানিয়েছে সংস্থাটি।

কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে ডিমের দাম ১২ শতাংশ বেড়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৫৯ শতাংশ বেশি। অ্যানি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতা গ্রহণের পরদিন থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাবেন। কিন্তু দাম কমার কোনো লক্ষণ তো দেখছি না।’

পাশাপাশি ব্যাপকভাবে সরকারি কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণেও ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে হতাশা প্রকাশ করেন অ্যানি। বলেন, ‘আমার বেশির ভাগ গ্রাহক বসবাস করেন ওয়াশিংটন ডিসিতে। কিন্তু তাঁদের অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন, ফলে তাঁদের জীবনযাত্রায় বড় ধাক্কা লেগেছে। আর এ কারণে মানুষ এখন খরচ করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক, যার কারণে কেকের অর্ডারও কমে গেছে।’

অ্যানি আরও জানান, ডিমের পাশাপাশি আরেকটি বড় দুশ্চিন্তা হচ্ছে চিনি। ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে যদি চিনির দাম বাড়ে, তবে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে—এমন আশঙ্কার কথাও জানান তিনি। বলেন, ‘চিনির দামও যদি আকাশছোঁয়া হয়, তাহলে হয়তো আমাকে নতুন চাকরির সন্ধান করতে হবে।’





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত