Homeঅর্থনীতিপেনশন কর্মসূচি বন্ধ নয় সুবিধা বাড়বে আরও

পেনশন কর্মসূচি বন্ধ নয় সুবিধা বাড়বে আরও


সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচিতে নিবন্ধন করে অনিশ্চয়তায় থাকা প্রায় পৌনে ৪ লাখ মানুষের জন্য মিলেছে স্বস্তির খবর। আওয়ামী লীগ সরকারের চালু করা এই কর্মসূচি বন্ধ বা বাতিল করছে না অন্তর্বর্তী সরকার। বরং তারা এই কর্মসূচির সুবিধা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘দেশে সামাজিক নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষার প্রশ্নে এ কর্মসূচির প্রয়োজন রয়েছে। এটি বন্ধ বা বাতিল করার কোনো পরিকল্পনা নেই।’

বরং পেনশন কর্মসূচি আরও সংস্কার ও উপযোগী করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, প্রচলিত স্কিমগুলোর বিষয়ে আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তাই এগুলোকে আরও সংস্কারের মাধ্যমে বিস্তৃত ও যুগোপযোগী করা হবে। যাতে এসব স্কিমের আওতায় ইতিমধ্যে যাঁরা নিবন্ধিত হয়েছেন বা ভবিষ্যতে যুক্ত হবেন, তাঁদের কী করে আরও বেশি আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি বিস্তৃত করতে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ রোজার আগেই সারা দেশের বিভাগীয়, জেলা ও থানা পর্যায়ে সর্বজনীন পেনশন মেলার আয়োজন করতে যাচ্ছে। এসব মেলায় আলোচনা সভা ও সেমিনারের মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হবে—এই কর্মসূচি কোনো স্বল্পমেয়াদি উদ্যোগ নয়। এটি দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য বৃদ্ধ বয়সের আর্থিক সুরক্ষার দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা। সরকার পরিবর্তন হোক বা পরিস্থিতি যা-ই হোক, জনস্বার্থে এই কর্মসূচি বহাল থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য (তহবিল ব্যবস্থাপনা) মো. গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে সব সময় সরকার কল্যাণমূলক কাজই করে থাকে। তাই কোনো সরকারই চাইবে না, এটি বন্ধ হয়ে যাক। বরং সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচিকে আরও যুগোপযোগী করার মাধ্যমে কী করে সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানো যায় সে বিষয়ে কাজ করতে আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

সর্বজনীন পেনশনে দেড় বছরের পথচলা

১৭ ফেব্রুয়ারি দেশে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির দেড় বছর পূর্ণ হবে। ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট ‘সমতা’, ‘সুরক্ষা’, ‘প্রগতি’ ও ‘প্রবাস’—এই চারটি স্কিমের নিবন্ধনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম শুরু হয়।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ও প্রবাসে থাকা নাগরিকদের মধ্যে মোট ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩০৬ জন এই কর্মসূচিতে নিবন্ধিত হয়েছেন। পেনশন তহবিলে তাঁদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৭ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ এই অর্থ সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করেছে, যার ফলে মুনাফাসহ তহবিলের মোট পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৪ কোটি টাকা।

নিবন্ধনের গতি: উত্থান ও স্থবিরতা

উদ্বোধনের পর প্রথম মাসেই সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির চারটি স্কিমে ১২ হাজার ৮৮৯ জন নিবন্ধিত হন। ষষ্ঠ মাস থেকে নিবন্ধনের গতি আরও বাড়তে থাকে, ফলে আট মাসের মধ্যেই মোট নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা ১ লাখে পৌঁছে যায়। এই সময়ে প্রতিদিন গড়ে ৪১৭ জন করে নতুন গ্রাহক যুক্ত হন। এরপরের দুই মাসে নিবন্ধনের হার আরও বেড়ে যায়, গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ৬৬৭ জন নতুন গ্রাহক অন্তর্ভুক্ত হলে মোট সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এভাবে গত বছরের জুলাই পর্যন্ত সর্বমোট ৩ লাখ ৬০ হাজার গ্রাহক অন্তর্ভুক্ত হন।

কিন্তু গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হঠাৎ করে নিবন্ধনের গতি কমে যায়। ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পূর্ববর্তী সাত মাসে নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছেন মাত্র ১৩ হাজার ৩০৬ জন। এর ফলে সর্বমোট নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩০৬।

এ ছাড়া নতুন সরকারের অধীনে পেনশন কর্মসূচির ভবিষ্যৎ কী দাঁড়ায়, সেই অনিশ্চয়তায় নিবন্ধিত অনেক গ্রাহকও নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ করছেন না। গত মাসে বেশির ভাগ গ্রাহকই তাঁদের চাঁদা পরিশোধ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য (তহবিল ব্যবস্থাপনা) মো. গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে জানান, দেশে বড় পরিবর্তনের কারণে অনেকেই দ্বিধায় ছিলেন, যার প্রভাব সর্বজনীন পেনশন নিবন্ধনেও পড়েছে। তবে এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। নিবন্ধন বাড়ছে আর আগ্রহীদের উদ্বেগ কাটাতে সরাসরি তাঁদের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা চলছে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত