কোম্পানির আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় গ্রাহকদের পাওনা টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলেও প্রমোদভ্রমণের জন্য সিলেটে বোর্ড সভার আয়োজন করেছেন হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের প্রবাসী পরিচালকেরা। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কোম্পানির চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন।
সিলেটে বোর্ড সভা আয়োজনের কারণ সম্পর্কে জামাল উদ্দিন বলেন, ‘২০০১, ২০০২, ২০০৩ সালসহ আগের অনেক বোর্ড মিটিং সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার একটু ভিন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমার সঙ্গে লন্ডন থেকে আসা ছয়-সাতজন পরিচালক রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দু-তিনজন বয়স্ক ও অসুস্থ। সিলেট একটি সুন্দর জায়গা, সেখানে তাঁরা কিছু সময় কাটাতে পারেন—এই ভাবনা থেকে সভা সিলেটে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
জামাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমার উদ্দেশ্য ছিল তাঁদেরকে সিলেটের বিভিন্ন স্থান দেখানো এবং কিছুটা বিনোদন দেওয়া। কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। আমি চাইছিলাম, সহকর্মীরা সিলেটে সময় কাটাক, আর যারা স্থানীয়, তারা সেখানে চলে যাক। যদি কেউ আমাকে ফোন করে প্রশ্ন করত, আপনি কেন সিলেটে সভা আয়োজন করলেন? আমি তাদেরকে বলতাম, আপনারা আসতে পারছেন না, তাই আমি চলে এসেছি।’
উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি হোমল্যান্ড লাইফের প্রধান কার্যালয়ের পরিবর্তে সিলেটের হোটেল ব্রিটানিয়ায় ২৯ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় পর্ষদ সভার আহ্বান করা হয়। সিলেটের ওই বোর্ড সভা আহ্বানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন কোম্পানিটির পরিচালক মোহাম্মদ জুলহাস। মামলার শুনানি শেষে চার সপ্তাহের জন্য সব সভা স্থগিত করে রুল জারি করেন আদালত।
কোম্পানির শীর্ষ দুই কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বোর্ডের অনুমোদন রয়েছে, তবে লিখিত কোনো অনুমোদন নেই। আমি কাউকে নিয়োগ বা অব্যাহতি দিতে পারি বোর্ডের অনুমোদন অনুযায়ী।’
অর্থ আত্মসাতের দায়ে মামলার আসামিকে ডিএমডি পদে নিয়োগ দেওয়া-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে জামাল উদ্দিন বলেন, ‘মামলা রয়েছে, এ কথা আমি জানি না। তবে তাঁকে নিয়োগ দেওয়ার সময় চারজন পরিচালক ছিলেন, যাঁদের মতামত নিয়ে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী ও একজন ডিএমডিকে আমি বরখাস্ত করেছি। তবে তাঁরা এখনো অফিসে আছেন।’ কেন তাঁরা অফিসে রয়েছেন, তা জানেন না বলে জানান তিনি।
কোম্পানির আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের অনেক গ্রাহক রয়েছেন, তাঁদের টাকা দিতে পারছি না। তবে আমি গ্রাহকদের কাছে অনুরোধ করছি, একটু ধৈর্য ধরুন এবং কিছুটা সময় দিন। আমরা আপনাদের সব পাওনা পরিশোধ করে দেব।’