Homeঅর্থনীতিনিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর প্যাকেজ ভ্যাট চান ব্যবসায়ীরা

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর প্যাকেজ ভ্যাট চান ব্যবসায়ীরা


নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর প্যাকেজ ভ্যাট ব্যবস্থা চালু ও বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমদানিতে এলসি মার্জিন ন্যূনতম ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এ ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মতপ্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

পুরান ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। আজ শনিবার রাজধানীর লালবাগের মীম কমিউনিটি সেন্টারে ডিসিসিআই আয়োজিত এই সভায় পুরান ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির নেতা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্যবসায়ীদের প্রধান দাবি

ব্যবসায়ীরা বলেন, যানজট, জলাবদ্ধতা, অপ্রতুল অবকাঠামো, উচ্চ সুদহার, কর ও ভ্যাটের জটিলতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং আমদানি-রপ্তানির দীর্ঘসূত্রতার কারণে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা চরম সংকটে রয়েছেন। এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তাঁরা। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর প্যাকেজ ভ্যাট ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দেন ব্যবসায়ী নেতারা।

এ সময় ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের টিকে থাকার জন্য কর ও ভ্যাট ব্যবস্থার সরলীকরণ এবং ব্যবসার প্রকৃতি অনুযায়ী বাস্তবসম্মত হার নির্ধারণ করা জরুরি। তিনি আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থার জটিলতা নিরসনের ওপরও গুরুত্ব দেন।

আরও যেসব দাবি

সভায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা কর-ভ্যাট ব্যবস্থার সরলীকরণ, যানজট নিরসন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, আমদানি পর্যায়ে ট্যারিফ ভ্যালু নির্ধারণ, ভ্যাট হার হ্রাস, বন্ড লাইসেন্সের আওতায় আমদানিকৃত পণ্যের অপব্যবহার বন্ধ, সরকারি ব্যয় হ্রাস ও বন্দরের পণ্য খালাসপ্রক্রিয়া সহজ করার প্রস্তাব দেন।

সভায় আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ডিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক মনোয়ার হোসেন করের হার যৌক্তিকীকরণ ও আওতা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এলসি মার্জিন ন্যূনতম ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা প্রয়োজন। একই অর্থবছরের মাঝপথে এসআরও জারি করে ভবিষ্যতে শুল্কহার পরিবর্তন না করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, এতে ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।

ডিসিসিআইয়ের সাবেক ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি আলহাজ আব্দুস সালাম দাবি করেন, অসহনীয় যানজট ও উচ্চ করের হার ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মুখে ফেলছে।

কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার

সভা থেকে পুরান ঢাকার যানজট নিরসনে আটটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ এবং ঢাকার বেশ কিছু রাস্তা ওয়ানওয়ে করার বিষয়ে পুলিশের পরিকল্পনার কথা জানান ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (লালবাগ বিভাগ) মো. জসীম উদ্দিন। এ ছাড়াও আসন্ন রমজান মাসে নগদ টাকা পরিবহনে ব্যবসায়ীদের পুলিশের সহায়তা নেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।

কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা দক্ষিণের অতিরিক্ত কমিশনার মানস কুমার বর্মন বলেন, সরকার ভ্যাট ব্যবস্থা সহজ করার জন্য অনলাইন রেজিস্ট্রেশন অটোমেটেড করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে ব্যবসায়ীরা হয়রানিমুক্ত হবেন। তিনি রসিদবিহীন ভ্যাটের টাকা না দেওয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভ্যাট সব সময় নির্ধারিত হয়ে থাকে মূল্য সংযোজনের ওপর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিফ ইকোনমিস্টস ইউনিটের পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. সেলিম আল মামুন বলেন, ২০২২-২৪ সালের মধ্যে স্থানীয় বাজারে ডলারের মূল্য ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পরিস্থিতি সামাল দিতে কাজ করছে এবং ইতিমধ্যে ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। তিনি জানান, গত ছয় মাসে আমদানি ৩ দশমিক ৫ ও রপ্তানি ১০ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া গত সাত মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬ বিলিয়ন ডলার, যা মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল করতে সহায়ক হবে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক টাস্কফোর্স গঠন করেছে বলেও তিনি জানান।

অনুষ্ঠান শেষে ৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ঢাকা চেম্বারের সদস্যপদ দেওয়া হয়। চেম্বার সভাপতি তাসকীন আহমেদ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে ডিসিসিআইয়ের সদস্যপদের সনদ তুলে দেন। ডিসিসিআই সহসভাপতি মো. সালেম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের অন্যান্য সদস্য ও সাবেক সভাপতিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত