ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য, বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিলে রপ্তানি মাত্র ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অথচ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, পাটপণ্য, চামড়া, ওষুধ, মাছসহ ১২ ধরনের পণ্যের সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে ব্রাজিলে। একটু উদ্যোগ নিলেই এসব পণ্য রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব। কারণ, ব্রাজিলের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিযোগিতামূলক নয়; বরং সহায়তামূলক। বড় অর্থনীতির দেশ হওয়ায় ইউরোপ, আমেরিকার মতো ব্রাজিলও রপ্তানির বড় বাজার হতে পারে।
এই লক্ষ্য সামনে রেখে প্রথমবারের মতো ‘মেড ইন বাংলাদেশ প্রদর্শনী-২০২৫’ আয়োজন করতে যাচ্ছে ব্রাজিল-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিবিসিসিআই)।
আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি সাইফুল আলম এ তথ্য জানান।
সাইফুল আলম বলেন, রপ্তানিযোগ্য পণ্যের প্রচার, বাজার বৈচিত্র্যকরণ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদার এবং লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে নেটওয়ার্কিং সহজ করার লক্ষ্যে বিবিসিসিআই চলতি বছরের ১৫-১৮ জুন ব্রাজিলের সাও পাওলোতে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য উদ্যোক্তা রেজিস্ট্রেশন, ব্রাজিলের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি চলছে।
পরে প্রদর্শনীর বিস্তারিত তুলে ধরেন বিবিসিসিআই মহাসচিব মো. জয়নাল আবদীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফারনান্দো দিয়াস ফেরেস।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সাইফুল আলম বলেন, ‘ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আয়োজিত মেড ইন বাংলাদেশ এক্সিবিশন-২০২৫ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশি আমদানিকারকদের পাশাপাশি রপ্তানিকারকদের জন্য নতুন বাজারে প্রবেশ এবং তাঁদের ব্যবসা বিশ্বব্যাপী উন্নীত করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
প্রদর্শনীতে ১০০ থেকে ১৫০টি বাংলাদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে আশা প্রকাশ করে সাইফুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা যাতে ওখানে ওয়ান টু ওয়ান কমিউনিকেশন করতে পারেন, এ জন্য আমরা আগেই ১ হাজার ব্রাজিলিয়ান উদ্যোক্তার সঙ্গে আলোচনা করব। এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশি আমদানিকারকদের জন্য ব্রাজিলে ব্যবসায়িক জোট গড়ার পাশাপাশি সয়াবিন, চিনি ও শিল্প যন্ত্রপাতির মতো উচ্চমানের পণ্য অন্বেষণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
প্রদর্শনীর বিস্তারিত তুলে ধরে বিবিসিসিআই মহাসচিব মো. জয়নাল আবদীন বলেন, ‘ব্রাজিলে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যালস, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া, মাছ-চিংড়ি, হোম টেক্সটাইল, সবজি, প্লাস্টিক, বাইসাইকেল ও তার যন্ত্রাংশ, হ্যান্ডিক্র্যাফট, পেট্রোলিয়াম, সিরামিকসহ ১২ ধরনের পণ্য ব্রাজিলে রপ্তানি করা যেতে পারে। আমরা সেখানে ঘুরে এগুলোর ব্যাপক চাহিদা দেখেছি। আমাদের বড় সুবিধা হলো, আমরা কম খরচে উৎপাদন করতে পারি। পাশাপাশি ব্রাজিল থেকে মিনারেল, ফুয়েল, ওয়েল, বিফ ও পোলট্রি আমদানি করা যেতে পারে। বাণিজ্যের পাশাপাশি ব্রাজিলের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারবেন এই এক্সপোর মাধ্যমে।’
প্রদর্শনীর জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আগাম নিবন্ধন খোলা থাকবে। অংশগ্রহণকারী প্রদর্শকদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি ৪ হাজার ডলার, আর বিটুবি নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের জন্য এই ফি ১ হাজার ডলার।