প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুরু করা বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের বলি হলো বোয়িং! চীনের একটি এয়ারলাইনসের জন্য তৈরি একটি বোয়িং জেট বিমান আজ রোববার যুক্তরাষ্ট্রে কোম্পানির উৎপাদন কেন্দ্রে ফেরত এসেছে। পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের জেরেই এমন ঘটনা ঘটল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানটি চীনের জিয়ামেন এয়ারলাইনসের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১১ মিনিটে সিয়াটলে বোয়িং ফিল্ডে উড়োজাহাজটি অবতরণ করে। জিয়ামেন এয়ারলাইনসের ব্র্যান্ড অনুযায়ী এটি রাঙানো।
দীর্ঘ ৫ হাজার মাইল ফেরত যাত্রায় গুয়াম এবং হাওয়াইতে জ্বালানি ভরার জন্য উড়োজাহাজটিকে বিরতি দিতে হয়েছে। ওই চীনা ক্যারিয়ারের কাছে বেশ কয়েকটি ৭৩৭ ম্যাক্স বিক্রির চূড়ান্ত ধাপের কাজ চলছিল। ফেরত পাঠানো উড়োজাহাজটি হস্তান্তরের অপেক্ষায় বোয়িংয়ের ঝৌশান কেন্দ্রে ছিল।
চলতি মাসে ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ভিত্তি শুল্ক ১৪৫ শতাংশ করেছেন। এর জবাবে চীন মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। বিমান চলাচল পরামর্শক সংস্থা আইবিএ–র মতে, একটি নতুন ৭৩৭ ম্যাক্সের বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এমন পরিস্থিতিতে, কোনো চীনা এয়ারলাইনস যদি বোয়িং জেট বিমান গ্রহণ করে, তবে এই শুল্কের কারণে তারা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত কে নিয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বোয়িং তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। চীনা জিয়ামেন এয়ারলাইনসও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বোয়িংয়ের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া মডেল ৭৩৭ ম্যাক্স। যুক্তরাষ্ট্রে বিমান শিল্প কয়েক দশক ধরে শুল্কমুক্ত সুবিধা ভোগ করে আসছে। ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলটি গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর ব্যাপকভাবে ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে আছে বোয়িং। এর মধ্যে ট্রাম্পের শুল্ক কোম্পানিটির ওপর ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে আবির্ভূত হলো। যেখানে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানে প্রায় পাঁচ বছরের আমদানি নিষেধাজ্ঞা এবং আগের বাণিজ্য উত্তেজনার ধকল কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, পরিবর্তনশীল শুল্ক নিয়ে বিভ্রান্তির কারণে অনেক বিমান সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। কিছু এয়ারলাইন সিইও জানিয়েছেন, তাঁরা শুল্ক পরিশোধের পরিবর্তে বিমান সরবরাহ স্থগিত করবেন।