Homeঅর্থনীতিজেট ফুয়েলের দাম লিটারে ১ টাকা কমানো সম্ভব: বিইআরসি

জেট ফুয়েলের দাম লিটারে ১ টাকা কমানো সম্ভব: বিইআরসি


উড়োজাহাজের জ্বালানি জেট ফুয়েলের দাম লিটারপ্রতি ১ টাকা কমানো সম্ভব বলে মনে করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি কমিটি। আজ রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে গণশুনানিতে জেট ফুয়েলের দাম নিয়ে গণশুনানিতে এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়।

আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে জেট ফুয়েলের পৃথক দর বিদ্যমান। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) আন্তর্জাতিক রুটের জন্য লিটারে ১ সেন্টস কমানো এবং অভ্যন্তরীণ রুটের জন্য ১ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল।

তবে অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহন ব্যবসায়ীরা এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন। গণশুনানিতে তাঁরা বলেন, বাংলাদেশে জেট ফুয়েলের দাম অনেক বেশি। এ কারণে তাঁরা আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যান। জেট ফুয়েলের দাম বেশি হওয়ায় অন্য দেশের উড়োজাহাজ এখানে ট্রানজিটও করে না। এতে সব মিলিয়ে বাংলাদেশেরই লোকসান বলে তাঁদের মত। তাঁরা মনে করেন, জেট ফুয়েলের দাম অনেক কমানো সম্ভব।

এর আগে বিপিসি জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করত। এই প্রথম দেশে জেট ফুয়েলের দাম গণশুনানির মাধ্যমে নির্ধারণের প্রক্রিয়া চলছে। বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদের নেতৃত্বে শুনানিতে অংশ নেন বিইআরসির সদস্য সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, মো. মিজানুর রহমান, মো. আব্দুর রাজ্জাক ও মোহাম্মদ শাহিদ সারওয়ার।

বিইআরসি টেকনিক্যাল কমিটি তার প্রতিবেদনে আরও বলেছে, বিপিসির ফর্মুলায় থাকা পরিচালন ব্যয়, আর্থিক চার্জ, স্টোরেজ চার্জ, বিতরণ ও বিপণন চার্জ, বিপিসির মার্জিন পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। ডিসেম্বর মাসের তথ্য অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতি লিটার জেট ফুয়েল আমদানির খরচ পড়েছে ৭৪.৫২ টাকা। শুল্ক-করাদি ২১.৮৯ টাকা, অপারেশনাল ব্যয় ৭.২৮ টাকা, কোম্পানি পর্যায়ে (বিমানবন্দর খরচ, পরিবহন ও কোম্পানির মার্জিন) ব্যয় ২.৬৪ টাকা এবং বিপিসির মার্জিন ৪.৩৯ টাকা যাচাই করা এবং আমদানি পর্যায়ের অন্যান্য খরচ পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। এসব পর্যালোচনা ছাড়াই তারা উভয় ক্ষেত্রে দর কমানোর পক্ষে মতামত দিয়েছে।

এ ছাড়া জেট ফুয়েলের অভ্যন্তরীণ রুটে বিদ্যমান দর ১১০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৫.৫১ টাকা এবং আন্তর্জাতিক রুটে ৭৪ সেন্টস থেকে কমিয়ে ৬৯ সেন্টস করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছে বিইআরসির কারিগরি কমিটি।

গণশুনানিতে ক্যাবের জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম বলেন, ‘আপনারা লেট পেমেন্ট ও ডেমারেজ খাতে যথাক্রমে ১ টাকা ও ১০ পয়সা হারে মার্জিন চেয়েছেন। এ ব্যয় নিয়মিত হিসেবে দিতে হলে প্রমাণ করে কোম্পানির দক্ষতার অভাব রয়েছে।’ জবাবে বিপিসির জেনারেল ম্যানেজার এ টি এম সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা টাকা দিই, অনেক সময় ডলার-সংকটে ব্যাংকগুলো পেমেন্ট দিতে বিলম্ব করে।’ এমন উত্তরে শামসুল আলম বলেন, এই দুর্বলতার দায় ভোক্তার কাঁধে চাপানো অন্যায়।

নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, ‘পদ্মা অয়েল কোম্পানির মনোপলি ব্যবসার কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের জ্বালানি তেলের দাম অনেক বেশি। বিদেশি এয়ারলাইনস এখানে কম তেল কিনছে। আমরা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছি না। আমরা লোকসান দিয়ে ঋণখেলাপি হচ্ছি, আর পদ্মা অয়েলের হিসাব ভারী হচ্ছে।’

মফিজুর রহমান বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধের সময় হঠাৎ করে একলাফে ৮৭ টাকা থেকে ১৩০ টাকা করা হলো। ২০২৩ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে গেলেও আমাদের দেশে কমানো হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের মতো এত বেশি দাম কোথাও নেই। কুয়ালালামপুরে ৫৭ সেন্টস, ব্যাংককে ৫৫ সেন্টস, সিঙ্গাপুরে ৫৮ সেন্টস, দুবাই ও দোহায় ৬১ সেন্টস, কলকাতায় ৬৩ সেন্টস; সেখানে আমাদের কিনতে হচ্ছে ৭৫ সেন্টসে।’ তিনি বিইআরসির কাছে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার আবেদন জানান।

শুনানি শেষে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, ‘আমরা সবার বক্তব্য জানলাম। শুনানি-পরবর্তী কারও কোনো মতামত থাকলে ৭ এপ্রিলের মধ্যে লিখিতভাবে জমা দেওয়া যাবে। যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁরা দিতে পারবেন, আবার অন্যরাও দিতে পারবেন। আমরা এলপি গ্যাসের ফর্মুলার মতো করতে চাই। আন্তর্জাতিক বাজারে দর কমবেশি হলে সেই অংশটুকু মাসে মাসে সমন্বয় করা হবে।’





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত