Homeঅর্থনীতিজিডিপিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অবদান প্রায় ২৮ শতাংশ

জিডিপিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অবদান প্রায় ২৮ শতাংশ


বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের উন্নয়নে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। ২০২৫-৩০ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় তৈরি করছে এসএমই নীতিমালা-২০২৫। বর্তমানে দেশের জিডিপিতে এই খাতের অবদান প্রায় ২৮ শতাংশ। তবে এই নীতিমালা কার্যকর করতে পর্যাপ্ত তদারকির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোর জন্য নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন বলে মনে করছে এসএমই ফাউন্ডেশন।

আজ বুধবার অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ইকোনমিকস রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সহযোগিতায় এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘এসএমই নীতিমালা-২০২৫: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ: গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ইআরএফের সভাপতি দৌলত আকতার মালা। প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুশফিকুর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, এসএমই নীতিমালা, ২০২৫-এর সম্ভাব্য বাস্তবায়নকাল জুলাই ২০২৫ থেকে জুন ২০৩০। নীতিমালায় বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের উন্নয়নে ১০টি কৌশলগত লক্ষ্যের আওতায় ৮৩টি কর্মকৌশল/কৌশলগত হাতিয়ার ও ৩১০টি কার্যক্রম রয়েছে। প্রতিটি কার্যক্রমের জন্য প্রধান বাস্তবায়নকারী (লিড ও কো-লিড) সংস্থা ছাড়াও সহযোগী বাস্তবায়নকারী (অ্যাসোসিয়েট) মন্ত্রণালয়/সংস্থা নির্ধারণ করা হয়েছে। কর্মকৌশলকে স্বল্পমেয়াদি (১ বছর), মধ্যমেয়াদি (২-৩ বছর) ও দীর্ঘমেয়াদি (৪-৫ বছর) এ তিন ভাগে বিন্যস্ত করা হয়েছে। এই নীতিমালা বাস্তবায়নে নিয়মিত সভা আয়োজন, অর্থ বরাদ্দ, বাস্তবায়নপ্রক্রিয়ার নজরদারি, ঢাকার বাইরে এসএমই ফাউন্ডেশনের কার্যালয় স্থাপন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করা প্রয়োজন।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাত। দেশের জিডিপিতে এই খাতের অবদান প্রায় ২৮ শতাংশ। শিল্প খাতের কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে। এই খাতের বিকাশ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে সরকারি নীতিমালা, কৌশলপত্র ও নির্দেশনা বাস্তবায়নে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এসএমই ফাউন্ডেশন।

মুশফিকুর রহমান বলেন, চেম্বার/ট্রেড বডিগুলোর বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি, নারী উদ্যোক্তাদের অর্থায়নে ব্যাংকারদের উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি, গবেষণা পরিচালনা, নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন ও ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলন, নারী উদ্যোক্তা পণ্য মেলার আয়োজন, অনলাইন সাপ্লায়ার্স প্ল্যাটফর্ম ও বিজনেস অ্যাডভাইজরি প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেছে। সারা দেশের ১৭৭টি এসএমই ক্লাস্টার চিহ্নিত করে ক্লাস্টারভিত্তিক উদ্যোক্তাদের চাহিদার ভিত্তিতে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশে প্রথমবারের মতো রাজশাহীর কালিহাতি পাদুকা ক্লাস্টারে কমন ফ্যাসিলিটি সেন্টার (সিএফসি) প্রতিষ্ঠা করেছে ফাউন্ডেশন। এযাবৎ ক্রেডিট হোলসেলিং কর্মসূচির আওতায় প্রায় ১০ হাজার উদ্যোক্তার মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। উদ্যোক্তাদের জন্য আইসিটি এনাবল সেবা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ প্রদান, বিভিন্ন সফটওয়্যার সেক্টর ও আইটি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্যবসায়িক মেলবন্ধন তৈরি করে ফাউন্ডেশন।

চেয়ারপারসন বলেন, ‘নীতিমালা শতভাগ বাস্তবায়নে এসএমই ফাউন্ডেশনসহ বাস্তবায়ন সহযোগী মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের অনুকূলে নিয়মিত অর্থ বরাদ্দসহ জাতীয় এসএমই উন্নয়ন পরিষদ—এনএসডিসি, এসএমই টাস্কফোর্সসহ সংশ্লিষ্ট কমিটির নিয়মিত সভা ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শিল্প মন্ত্রণালয় যথাযথ নজরদারি করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের এসএমই খাতের অবদান কম। উদাহরণস্বরূপ পাকিস্তানে এই হার ৪০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৫২, চীনে ৬০ ও ভারতে ৩৭ শতাংশ। ২০১৯ সালের এসএমই নীতিমালা বাস্তবায়নে বাজেট বরাদ্দ না থাকায় এটি উদ্যোক্তাদের চাহিদা পূরণে যথেষ্ট কার্যকর হয়নি। তবে নতুন নীতিমালাটি যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ খাতের বিকাশে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ এসএমই খাতের সামনে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অর্থের সীমিত অ্যাকসেস, উচ্চ সুদের হারের কারণে অর্থায়নের সমস্যা, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত, পর্যাপ্ত নীতিমালার অভাব, পণ্যের বাজারজাতকরণের সমস্যা, যা উত্তরণের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন।

কর্মশালা সঞ্চালনা করেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম এবং ধন্যবাদ জানান এসএমই ফাউন্ডেশনের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ মোরশেদ আলম।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত