Homeঅর্থনীতিকর্মবিরতি প্রত্যাহার, কাজে ফিরেছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

কর্মবিরতি প্রত্যাহার, কাজে ফিরেছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা


পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ রোববার সকাল থেকে কাজে ফিরতে দেখা গেছে তাদের।

এদিকে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সঙ্গে বৈঠক করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা। বৈঠকে বিএসইসি অভ্যন্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নেতৃত্বে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ), শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজ, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ও সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন।

আজ রোববার সকালে আগারগাঁওয়ে বিএসইসির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে অবস্থান করছেন।

গতকাল শনিবার রাতে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানানো হয়। এ বিষয়ে বিএসইসির এক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন থেকে ডিউটিতে জয়েন করতে বলা হয়েছে। আমরা করেছি।’

কেন কর্মবিরতি প্রত্যাহার জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সিনিয়ররা সিদ্ধান্ত নেন। আমরা এসবের কিছু জানি না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, আজ সকাল থেকেই বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগদান করেছেন। তবে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, তারা কেউই অফিস করছেন না।

পুঁজিবাজারের ১২টি কোম্পানির বিভিন্ন অনিয়ম খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন বিএসইসির কমিশন। ইতিমধ্যে সাতটি কোম্পানির বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। এসব তদন্ত প্রতিবেদনে বিএসইসির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয় উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ না করলেও এর ভিত্তিতে দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ জন কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। এ ছাড়াও গত মঙ্গলবার বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

আলোচনা রয়েছে, আগামী আরও অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এসব নিয়ে বিএসইসির কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। পরে সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর পরেই বিএসইসির কর্মকর্তারা একাট্টা হয়ে পদত্যাগের দাবিতে চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে গত বুধবার চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সেনাবাহিনী তাঁদের উদ্ধার করে।

ওই দিন বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে চেয়ারম্যান কমিশনার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘কমিশনের কর্মকর্তারা অযোগ্য, তাঁরা বিএসইসির কর্মকর্তাদের কোনো কাজে সহযোগিতা করেন না।’

এরপর ঘোষণা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার কর্মবিরতিও পালন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেদিন বিকেল ৩টার পরে সেনাবাহিনী পাহারায় বিএসইসিতে এসে চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা জানান, কোনো অন্যায়ের কাছে তাঁরা মাথা নত করবেন না। সরকারের পক্ষ থেকে কাজ করে যেতে বলা হয়েছে।

একই দিনে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে রাখা, শারীরিকভাবে হেনস্তা ও ভাঙচুর করার অভিযোগে বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন—বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, রেজাউল করিম, পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা, অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম, উপপরিচালক বনী ইয়ামিন, আল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক জনি হোসেন, রায়হান কবীর, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল বাতেন, লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ।

মামলায় আসামি ১৬ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করতে অভিযানে নেমেছে শেরেবাংলা নগর থানা-পুলিশ। তবে তাদের কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানান শেরেবাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম আজম।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত