কাঁচামাল সংকটের কারণ দেখিয়ে কারখানা ‘লে-অফ’ করে রাখা বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড (বেক্সিমকো) সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর আল রাজি কমপ্লেক্সে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হবে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থ্যানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোতে অস্থিরতা চলছে। শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের কয়েকটি কারখানা।
বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা। তিনি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকে গ্রুপটির উদ্যোক্তারা একরকম আড়ালে থেকেই কোম্পানি চালাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনের কারণ জানতে চাইলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো লিমিটেডের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাঁচামাল তো নেই। এলসি খুলতে পারছি না কোনো ব্যাংকে। আমরা কোম্পানির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়ে এলসি সুবিধা চালু করার দাবি জানাব সরকারের কাছে।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং সুবিধা সচল করতে পারলেই কারখানা খোলা সম্ভব হবে। আমরা চাই এলসি করার সুযোগ দিক সরকার।’
জানুয়ারির ৩০ তারিখ পর্যন্ত লে-অফ ঘোষণা করা আছে বেক্সিমকো লিমিটেড। এর আগেই কারখানা খুলতে এলসি চালুর দাবি করছে তারা।
বেক্সিমকো লিমিটেড ছাড়াও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও শাইনপুকুর সিরামিকস পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। এ দুটি কারখানার উৎপাদন সচল রয়েছে। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস দেশের পুঁজিবাজারের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জেও তালিকাভুক্ত।
বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালকদের বেশির ভাগ আত্মগোপনে রয়েছেন। অনেকগুলো অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ থাকায় এলসি খুলতে পারছে না কোম্পানি। ব্যাংক থেকে টাকা পাওয়া বন্ধ হওয়ায় নগদ অর্থের সংকটে পড়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলো।
এই অবস্থায় বেতন না পেয়ে বেক্সিমকোর বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করলে সরকার তিন মাসের বেতনের ব্যবস্থা করে দেয়। পরে বেক্সিমকো গ্রুপের প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক, কর্মচারীর কর্মসংস্থান ঠিক রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও অর্থনীতির স্বার্থে কোম্পানিগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের উপদেষ্টা পর্যায় থেকে একটি কমিটি করা হয়।
সেই কমিটি বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলোকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করে সিদ্ধান্ত নেয়। মুনাফায় থাকা কোম্পানিগুলো চালানোর পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয় উপদেষ্টা কমিটি। এমন প্রেক্ষাপটে ১ জানুয়ারি তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানিতে ২৫ জন করে স্বতন্ত্র পরিচালক বসায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।