Homeঅর্থনীতিএকদিনে মার্কিন শেয়ারবাজার হারাল ২.৪ ট্রিলিয়ন, ডলারের ব্যাপক দরপতন

একদিনে মার্কিন শেয়ারবাজার হারাল ২.৪ ট্রিলিয়ন, ডলারের ব্যাপক দরপতন


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর প্রধান মার্কিন শেয়ারবাজারগুলোর সূচক ২০২০ সালের পর সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন দেখেছে। এক দিনেই মার্কিন শেয়ার বাজারগুলো থেকে উধাও হয়ে গেছে ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার বা ২ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার। একই সঙ্গে মার্কিন মুদ্রা ডলারের মানেরও অবনতি হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর বাণিজ্য শুল্ক বিশ্বব্যাপী মন্দার আশঙ্কা তৈরি করেছে এবং বিনিয়োগকারীদের বন্ড ও ইয়েনের মতো নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যমের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

ট্রাম্প ট্যারিফ ঘোষণার পর মার্কিন শীর্ষ ৫০০ কোম্পানির তালিকাভুক্ত শেয়ারবাজার এসঅ্যান্ডপি-৫০০ এ কোম্পানিগুলো সম্মিলিতভাবে ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, যা ২০২০ সালের করোনা মহামারির পর সবচেয়ে বড় পতন।

ওয়াল স্ট্রিটে সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে নাসডাক কম্পোজিট ইনডেক্সের, দিন শেষে এই সূচক ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে, যা ২০২০ সালের মার্চের পর সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন। অন্যদিকে, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ ২০২০ সালের জুনের পর তাদের সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন দেখেছে।

আমদানি করা পণ্যের ওপর নতুন করে ১০ শতাংশ বেসলাইন ট্যারিফ বা ভিত্তি শুল্ক এবং ট্রাম্পের কথিত ‘অন্যায্য বাণিজ্য বাধার’ কারণে বেশ কয়েকটি দেশের ওপর আরোপিত বিপুল পরিমাণ পাল্টাপাল্টি শুল্ক ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন, একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য বিরোধ বিশ্ব অর্থনীতির তীব্র মন্দার কারণ হতে পারে এবং মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে দিতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ বাণিজ্য শুল্ক এমন এক বিশ্ব অর্থনীতিকে আঘাত করছে যা মহামারি পরবর্তী মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার মোকাবিলা করছে।

ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিলে অবস্থিত চেজ ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট পিটার টুজ বলেছেন, ‘আজ বাজার ধসে পড়েছে এবং আমি এটিকে বিনিয়োগকারীরা ভবিষ্যতে কী ভাবছেন তার প্রায় সম্পূর্ণ রিসেট হিসেবে দেখছি।’ তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বব্যাপী বেশির ভাগ কোম্পানির রাজস্ব এবং আয়ের প্রত্যাশা কমিয়ে আনা হবে। বাজার হ্রাসকৃত প্রবৃদ্ধি, হ্রাসকৃত আয় এবং হ্রাসকৃত রাজস্বকে প্রতিফলিত করছে।’

অ্যাপলের শেয়ারের মূল্য কমেছে ৯ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। যার প্রধান কারণ চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক। চীনে অ্যাপলের বেশির ভাগ উৎপাদন কারখানা অবস্থিত। আমাজনের শেয়ারের মূল্য কমেছে ৯ শতাংশ, মাইক্রোসফটের ২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং এনভিডিয়ার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।

এসঅ্যান্ডপি ৫০০ প্রযুক্তি সূচক ৬ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ জ্বালানি খাত সূচক সাড়ে ৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, কারণ দিনের শুরুতেই তেলের দাম ৬ শতাংশের শি কমে গিয়েছিল।

ওয়াল স্ট্রিটের বিনিয়োগকারীদের ভয় বা অনাস্থার পরিমাপক হিসেবে পরিচিত সিবিওই ভোলাটিলিটি ইনডেক্স ৩০ দশমিক ০২—এ উন্নীত হয়েছে, যা ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর সর্বোচ্চ।

এদিকে, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পর মার্কিন ডলারও ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়েছে। ইউরো ডলারের বিপরীতে ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে এবং সর্বশেষ ১.৭৪ শতাংশ বেড়ে ১ ইউরোর বিপরীতে পরিশোধ করতে হচ্ছে ১ দশমিক ১০৩৭ ডলার লেনদেন হয়েছে, যেখানে ডলার জাপানি ইয়েনের বিপরীতে ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে ১৪৬ দশমিক ৪৪৫ ইয়েনে এবং সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমে শূন্য দশমিক ৮৬০৮ ফ্রাঁতে দাঁড়িয়েছে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত