অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, সংস্কারের কথা বলে সংস্কারের প্রক্রিয়াকে সরকার পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। তারা শেখ হাসিনার পথ অনুসরণ করে বিচারক নিয়োগ করছেন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেছেন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে লোক নিয়োগ করেছেন। এ সরকার কতটুকু সংস্কার করতে চায় জানি না। কিন্তু সংস্কারের নামে বছরের পর বছর ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে চাইলে বাংলাদেশের মানুষ সেটা গ্রহণ করবে না।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জিয়া শিশু-কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাবেক আহ্বায়ক জাহিদ হোসেন চুন্নুর ২৯তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে এ আয়োজন করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘সরকার সংস্কারের কথা বলে। কিন্তু সরকার ইতোমধ্যে সংস্কারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ মিস করেছে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করার ক্ষেত্রে সংস্কারের যে উদ্যোগ সেখানে তারা ভুল করেছে। নির্বাচনের কোনও তারিখ দেননি, কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠন করে বসলেন। অথচ নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত কোনও সংস্কারের প্রতিবেদনই আসেনি। দুর্নীতি দমন কমিশন নিয়ে আলোচনা হওয়ার প্রথম রিপোর্ট পেশ করার আগেই সরকার দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করে বসলেন। বিচার বিভাগে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগ করে বসলেন। শেখ হাসিনা যে পদ্ধতিতে বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন, ঠিক সেভাবেই এই সরকার বিচারক নিয়োগ দেন। আমরা চেয়েছিলাম সংস্কারের মধ্যে দিয়ে বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া তৈরি হবে। কিন্তু সরকার সেটি করেনি।’
তিনি বলেন, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বলতম সরকার হলো, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। একটা দুর্বল সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। এগুলো ঠিক করার জন্য একটি নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের সব সংকটের কারণ হলো নির্বাচন।’
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের সংকট এখনও শেষ হয়নি। ভীষণ একটা সংকটের মধ্যে আমরা আছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান বারবার বলেছেন, আগামী নির্বাচন কঠিন হবে এবং বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মানুষের কাছে যেতে হবে এবং আস্থা অর্জন করতে হবে। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্টের আগের রাজনীতি আর ৫ আগস্টের পরের রাজনীতি এক নয়।’
জিয়া শিশু-কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।