শিবিরকে উদ্দেশ করে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আকাঙ্ক্ষা কী ছিল এটা সবাই জানে। আকাঙ্ক্ষা ছিল মানুষ ভোট দিতে পারবে। মানুষ স্বচ্ছন্দে বাজার করতে পারবে, চলাফেরা করতে পারবে। খুন হবে না, গুম হবে না। বাজার নিয়ন্ত্রণ হবে, দুর্নীতি বন্ধ হবে। সীমাহীন ব্যাংক লুট, ঘুষ দুর্নীতি বন্ধ হবে। কিন্তু এগুলো এখন দুঃখজনক পর্যায়ে আছে।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে ‘অভ্যুত্থানের পাঁচ মাস: আকাঙ্ক্ষা ও শঙ্কা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শিবিরকে উদ্দেশ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘ শিবির বলে তারা ছাত্রলীগের মধ্যে ছিল। তাহলে ছাত্রলীগ যাদের পিটিয়েছে শিবিরও তাদের পিটিয়েছে। আবার আরেকজন আছে সে ছাত্রলীগ থেকে এসেছে। সে আর ছাত্রলীগে আবার যেতে পারবে না। কারণ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন।
তিনি বলেন, ‘পরিবর্তনের পরে বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আছে তারা কী করলেন? এই সরকার এখনও কোনোকিছু করতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বাজার নিয়ন্ত্রণ কোনোকিছুই করতে পারেনি। কিছু করতে না পারলে কী জন্যে এসেছেন আপনারা? অনেকেই শিশুসুলভ বক্তব্য দেয়। এগুলো প্রত্যাহার করেন। আপনাদের জন্মের অনেক আগে বিএনপি কয়েকবার ক্ষমতায় এসেছে। আপনারা যখন শিশু তখন বিএনপি আন্দোলনে নেমেছে। ১৫ বছর পরে আপনারা আন্দোলন করলেন। সবাই আপনাদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা এতো ভয় পাচ্ছেন কেন? এত বড় একটা গণঅভ্যুত্থান করেছেন। মানুষ আপনাদের এমনিই ভোট দেবে। এরশাদ পতন আন্দোলনের সময় মেইন ভূমিকা পালন করেছিল ছাত্রদল। পরবর্তী সময়ে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। নির্বাচন হলে ওই হিসাবে আপনাদের জেতার কথা।’
ড. ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি সম্মানিত মানুষ। এমন কোনও কাজ করবেন না, যাতে আপনার ওপর দেশের মানুষের সন্দেহ সৃষ্টি হয়। আপনার সম্মান বিনষ্ট হয়। আপনার ওপর এখনও বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা আছে। সেই আস্থা নষ্ট করবেন না। আপনাকে কেউ না কেউ ব্যবহার, কলঙ্কিত করতে চাচ্ছে। এই জায়গায় আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।’
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমরা আশা করতে চাই, এই বছরের মধ্যেই একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সরকার প্রধান হিসাবে ড. ইউনূস সাহেবও বলেছেন, এ বছরের মধ্যে অথবা ২৬ এর প্রথমে নির্বাচন হবে। এর মধ্যে যাতে থাকে তাহলে ভালো কিছু হবে। কারণ আমরা চাই আপনাকে (ড. ইউনূস) যেমন ফুলের মালা দিয়ে বসিয়েছি। তেমনই ফুলের মালা দিয়ে বিদায় দিতে।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভারতকে ছোট করে দেখবেন না। শেখ হাসিনা প্রচুর দুর্নীতি করেছে। তার কাছে প্রচুর অস্ত্র রয়েছে। এই শক্তিকে ছোট করে না দেখে আন্দোলনকারী শক্তিদের বলবো একটু হুসে থাকতে হবে। এই সচিবালয়ে এখনও আওয়ামী লীগের দোসররা রয়েছে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে হবে।’
বাংলাদেশ ইউথ ফোরামের সভাপতি মো. সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় ও উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন– বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. হারুনুর রশিদ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপির সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহকারী মহাসচিব বাসির জামাল প্রমুখ।