বইমেলার সব্যসাচী প্রকাশনীর স্টলে নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিনের বই রাখার অভিযোগে একদল বিক্ষুব্ধ লোকের রোষানলে পড়েন শতাব্দী ভব নামে এক লেখক। পুলিশের সাহায্যে মেলা থেকে বের করে নেওয়া হয় তাকে। এ সময় প্রকাশ্যে লেখককে ক্ষমা চাইতে হয়। এর পরপরই সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয় স্টলটি। বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানায়, সাময়িক বন্ধের পর স্টলটি খুলে দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত টাস্কফোর্সের সভার পর নেওয়া হবে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় সব্যসাচী স্টলে এই বিক্ষোভের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি করা দেখে সব্যসাচীর স্টলে ভিড় করে একদল লোক। লেখক শতাব্দী তখন সেখানেই বসেছিলেন। তসলিমা নাসরিনের বই কেন বিক্রি করছেন প্রশ্নকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে শতাব্দী ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলে উত্তেজিত লোকজন তাকে মারতে যায়। এ সময় তাকে কানে ধরে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও ওঠে। এক পর্যায়ে এই লেখক হাতজোড় করেন এবং পুলিশ তাকে নিয়ে চলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ইমরান নাজির বলেন, ‘লোকজন ওই লেখককে মারতে গেলে পুলিশ বাধা দেয় এবং তাকে নিয়ে বই মেলার বাইরে চলে যায়। এ সময় শতাব্দী উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চান। শিক্ষার্থীদের উত্তেজনার মুখে বই মেলার সব্যসাচী স্টলটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ।’
বইমেলা টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ড. সেলিম রেজা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে সব্যসাচী স্টলটি বন্ধ করা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। স্টলটি কিছুক্ষণ বন্ধ রাখার পর এখন খোলা হয়েছে। বইমেলা কমিটি ও সেখানে উপস্থিত থাকা আমাদের টাস্কফোর্সের সঙ্গে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত।
প্রসঙ্গত, এ ঘটনার আগে থেকেই স্টলে তসলিমা নাসরিনের বই রাখার কারণে সব্যসাচী প্রকাশনীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছে সব্যসাচীর প্রকাশনীর প্রকাশক মেহরান সানজানা। এ বিষয়ে ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি লেখেন, বাংলা একাডেমির মেলার মাঠের দায়িত্বে যিনি আছেন, আমাকে কল দিয়ে বললেন, তসলিমা নাসরিনের বই সরিয়ে ফেলতে। শাহবাগ থানার ওসিও একই কথা বললেন। বাধ্য হয়ে সরাতে হচ্ছে তসলিমা নাসরিনের ‘‘চুম্বন’’ বইটি।’