২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে সেই দায়িত্বশীল ফিফটি নাকি ২০১২ এশিয়া কাপে একই দলের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো বিধ্বংসী ইনিংস, কোনটি এগিয়ে থাকবে মুশফিকুর রহিমের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে। নাকি ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই অনবদ্য ফিফটি, ২০১৮ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভাঙা পাঁজর নিয়ে ১৪৪ রানের অসাধারণ সেঞ্চুরি। নাকি ক্যারিয়ারে প্রথমবার ও একমাত্র ইনিংস যেখানে ওপেনিংয়ে নেমে ৯৮ রান করে দলকে জিতিয়েছিলেন।
ওয়ানডেতে মুশফিকুরের লম্বা ক্যারিয়ারের সারাংশ করলে কোনটা এগিয়ে থাকবে? উত্তর যেটাই আসুক, মুশফিকুর বাংলাদেশের স্বাচ্ছন্দ্যের ফরম্যাট ওয়ানডে ক্রিকেটকে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কিন্তু ছোট-বড় অনেক উপলক্ষ্য এনে দিয়েছেন যেগুলোতে ৫৬ হাজার বর্গমাইল আনন্দে মেতে উঠেছে।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শেষ বলে দেওয়ায় রঙিন ক্রিকেটে তার পথচলা থমকে গেল। ওয়ানডে ক্রিকেটে বেশ কিছু রেকর্ডকে সঙ্গী করেছেন মুশফিকুর। আছে নানা কীর্তি। সেসবে একবার চোখ বুলানো যাক,
• ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান মুশফিকুর রহিমের। ২৭৪ ম্যাচে ২৫৬ ইনিংসে ৩৬.৪২ গড়ে মুশফিকুর এই রান করেছেন।
• ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন মুশফিকুর। তার ওয়ানডে ম্যাচ সংখ্যা ২৭৪। ২৪৭ ম্যাচ নিয়ে সাকিব আল হাসান দুইয়ে ও ২৪৩ ম্যাচ নিয়ে তামিম ইকবাল রয়েছেন তিনে।
• ওয়ানডেতে যৌথভাবে সেঞ্চুরির তালিকায় মুশফিকুরের অবস্থান দুইয়ে। ১৪ সেঞ্চুরি নিয়ে তামিম রয়েছেন শীর্ষে। মুশফিকুর ও সাকিবের সেঞ্চুরির সংখ্যা ৯টি করে। এছাড়া ৪৯ ফিফটিও আছে তার।
• উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে তার ধারের কাছেও কেউ নেই। ২৪৩ ইনিংসে মুশফিক ৭ হাজার ২৫৪ রান করেছেন। তার পরে আছেন খালেদ মাসুদ। ১১০ ইনিংসে তার রান ১ হাজার ৮১৮।
• মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তামিম ইকবালের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান মুশফিকুরের। ৯১ ইনিংসে ২ হাজার ৬৭৪ রান করেছেন। তামিমের ৮৫ ইনিংসে রান ২ হাজার ৮৯৭।
• ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিকুর রহিম। সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৬০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিকুর।
• মিডল অর্ডারে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭ হাজার ৪৪৮ রান করেছেন মুশফিকুর।
• তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। ৪৭৯ ম্যাচে ৫২৩ ইনিংসে তার রান ১৫ হাজার ৩০২। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মুশফিকুর বাদে ১৫ হাজার রান ছুঁয়েছেন কেবল তামিম ইকবাল। তার রান ১৫ হাজার ১৯২।
• উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান মুশফিকুরের। ২৪৩ ইনিংসে তার রান ৭ হাজার ২৫৪। মুশফিকুরের ওপরে আছেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ৯ হাজার ৪১০। মাহেন্দ্র সিং ধোনি ১০ হাজার ৭৭৩ এবং কুমার সাঙ্গাকারা ১৩ হাজার ৩৪১।
• ওয়ানডে বিশ্বকাপে উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান মুশফিকুরের। ৩৭ ইনিংসে ১ হাজার ৭৯ রান করেছেন। শীর্ষে আছেন কুমার সাঙ্গাকারা, ৩৫ ইনিংসে ১ হাজার ৫৩২। এরপর আছেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ১ হাজার ৮৫।
• ২০০৬ সালে খেলা শুরুর পর ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ওয়ানডেতে রান সংগ্রাহকের তালিকায় মুশফিকুর রয়েছেন শীর্ষ দশে।
• ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসালের রেকর্ড মুশফিকুরের। ২৫৮ ইনিংসে ২৯৭ ডিসমিসাল তার। যেখানে ক্যাচ আছে ২৪১টি। স্টাম্পিং ৫৬টি।
• এক ইনিংসে তার ৫টি করে ডিসমিসাল আছে দুইবার।
• ওয়ানডেতে উইকেট কিপার মধ্যে ডিসমিসালের রেকর্ডে সেরা পাঁচে অবস্থান মুশফিকুরের।