আগামী ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তার আগে শেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলে ফেললো বাংলাদেশ। অভিজ্ঞতা ভালো হলো না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশ হলো। আইসিসির অন্যতম শীর্ষ ইভেন্টের আগে প্রস্তুতি হলো একেবারে জঘন্য। অথচ ওয়েস্ট ইন্ডিজে পা রাখার আগে ওয়ানডেতে তাদের বিপক্ষে টানা ১১ ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের পর কোনও ওয়ানডে সিরিজও হারেনি। তারাই কি না টানা তিন ম্যাচই হেরে গেলো! সেন্ট কিটসে বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্স টিম ম্যানেজমেন্টের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলছে।
বাংলাদেশ দল টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির চেয়ে ওয়ানডেতে ভালো দল, এমন দাবি তাদের নিজেদেরই। দলটির ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফের সদস্য এমনকি বোর্ড পরিচালকরাও এই কথা শুনিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন প্রায় সময়। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে নিজেদের স্বাচ্ছন্দ্যের সংস্করণেও নাজুক অবস্থা বাংলাদেশ দলের। শুধু এই সিরিজই নয়, ক্যারিবীয়ান দ্বীপপুঞ্জে সফরের আগে বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে।
গত ২ বছরে ৪৪ ওয়ানডেতে ১৬ জয়, হার ২৫টি। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকে ১২ ওয়ানডের ৮টিই হেরেছে বাংলাদেশ। এমন অস্বস্তিকর পরিসংখ্যান সঙ্গে নিয়েই আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাবে বাংলাদেশ দল।
যদিও সাম্প্রতিক সময়ে স্কোয়াডের নিয়মিত ক্রিকেটারদের অনেকেই নেই। চোটের কারণে ছিলেন না অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম ও তাওহীদ হৃদয়। ব্যক্তিগত কারণে ছুটিতে বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। সবমিলিয়ে মূল ক্রিকেটারদের ছাড়াই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শেষ প্রস্তুতি সিরিজে নামতে হয়েছিল বাংলাদেশ দলকে।
ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও ক্রিকেটারদের ঘাটতি লক্ষ করা গেছে। প্রথম ওয়ানডেতে ২৯৪ রান করেও ৫ উইকেটে হারের কারণ হিসেবেও মিরাজ বলেছিলেন মাঝের ওভারে ভালো বোলিং করতে না পারার কথা। শেষ ওয়ানডেতে ৩২১ রান করে চার উইকেটে হেরেও সেই কথা বললেন তিনি।
তবে ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সিনিয়র খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে। শান্ত, মুশফিক, মোস্তাফিজ ও হৃদয়ের মতো খেলোয়াড়ের অভাব অনুভূত হয়েছে। মিরাজ স্বীকার করেন, ‘চারে ব্যাটিংয়ের দায়িত্ব আমাকেই নিতে হতো। সিনিয়র খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি আমাদের জন্য কঠিন ছিল।’
আফগানিস্তান সিরিজে অংশ নেওয়ার আগেই শান্ত বলেছিলেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কীভাবে খেলতে হবে তার একটা ধারণা পেতে চান সদ্য শেষ হওয়া দুই সিরিজ থেকে। আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে বাংলাদেশের যে পারফরম্যান্স, তাতে করে ধারণা করা যায় শান্তরা আসলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কেমন করবেন? এমন পারফরম্যান্সে শঙ্কা উঠছেই, আগের টুর্নামেন্টগুলোর মতোই কি হতে যাচ্ছে শান্ত-মিরাজদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অভিজ্ঞতা!