ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। খান ইউনিসে বিমান থেকে আসা গুলিতে তিন জন আহত হয়েছে। সোমবার (৩ মার্চ) গাজার চিকিৎসাকর্মীরা হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েল পুরোপুরি অবরোধ আরোপ করায় ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আশঙ্কা বাড়ছে যে যুদ্ধবিরতি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়তে পারে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গাজার পূর্ব ও দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থান নেওয়া ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো সারারাত ধরে গোলাগুলি ও শেল নিক্ষেপ করেছে।
হামাস-সমর্থিত একটি গোষ্ঠীর এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, গাজার যোদ্ধাদের মধ্যে ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা খান ইউনিস উপকূলীয় এলাকায় একটি মোটরবোট লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। ওই বোট ওই এলাকায় নিরাপত্তা নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছিল এবং হুমকি তৈরি করছিল।
সামরিক বাহিনী আরও জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণে তাদের বাহিনীর দিকে দুইজন সন্দেহভাজন এগিয়ে আসছিল এবং হুমকি তৈরি করছিল। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সন্দেহভাজনদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় এবং ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে শনাক্ত করা হয়েছে।’
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে জানুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ গত সপ্তাহান্তে শেষ হয়েছে। তবে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে কোনও চুক্তি হয়নি।
হামাস বলছে, এখনই দ্বিতীয় ধাপ শুরু করতে হবে, যার মাধ্যমে ইসরায়েলি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করবে এবং যুদ্ধের অবসান ঘটবে। কিন্তু ইসরায়েল কেবল এপ্রিল পর্যন্ত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে হামাসকে আরও জিম্মি মুক্তি দিতে হবে, বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিরা মুক্তি পাবে—তবে গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না।
সোমবার পরে, হামাস কর্মকর্তা ওসামা হামদান বলেছেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাড়ানোর যে দাবি জানাচ্ছে, তা আলোচনাকে শূন্যের কোঠায় নিয়ে যাচ্ছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে হামদান বলেন, যদি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই চুক্তিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেন এবং চুক্তিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হন, তাহলে মধ্যস্থতাকারীরা সম্পূর্ণ দায় বহন করবে।
দুইজন ইসরায়েলি সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মধ্যস্থতাকারীরা ইসরায়েলের কাছে অনুরোধ করেছেন যে কয়েক দিন সময় দেওয়া হোক, যাতে অচলাবস্থা নিরসন করা যায়।
ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আবারও ওই অঞ্চলে যাবেন, যাতে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাড়ানো বা দ্বিতীয় ধাপে অগ্রসর হওয়ার পথ তৈরি করা যায়।
মুখপাত্র আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে দিয়েছেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বারবার বলেছেন, সকল জিম্মিকে অবশ্যই অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, যার মধ্যে আমেরিকান জিম্মিরাও অন্তর্ভুক্ত।