ব্রহ্মপুত্রের শাখাহাতী চরের মিলন মিয়া (৪০)। তিনি নিয়ে এসেছেন ১০ মণ কাঁচা বাদাম। প্রতি মণ তিন হাজার টাকা করে বিক্রির আশা থাকলেও তা দুই হাজারের ওপরে দাম বলছেন না ব্যবসায়ীরা।
চোখেমুখে লোকসানের হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, আবাদে যা খরচ হয়েছে, তা–ই উঠবে না। বাড়ির সবাই মাঠে খেটে ছয় বিঘা জমিতে বাদাম চাষে এবারের খরচ ৮০ হাজার টাকার মতো। বাদাম হয়েছে ৩০ মণ। প্রতি মণ দুই হাজার করে বিক্রি করলে আবাদের খরচই ওঠে না। মাঝখানে বন্যার ক্ষতি ও কামলা খরচ বাদ দিয়ে হিসাব করলেও লস। এদিকে পেঁয়াজ ও ভুট্টার বীজও খারাপ হওয়ায় কপালে হাত কৃষকদের। সব জায়গাতেই কৃষকদের বিপদ।
বাজারে নতুন আলু এখন ১৫ টাকা কেজি, অথচ আলুবীজ কৃষকেরা কিনেছেন দুই হাজার টাকা মণ। অর্থাৎ ৫০ টাকা কেজি; সঙ্গে বিষ, বীজ, কামলা খরচ তো আছেই। কৃষকের ঘরে আলু। কোল্ড স্টোরেজগুলো যেখানে ৫০ কেজির প্রতিটি বস্তা গত বছর ভাড়া নিয়েছে ৩০০ টাকা, সেখানে এ বছর ৪০০ টাকা নিচ্ছে। কৃষকের শ্রম কে খায়?
শিল্পপণ্যের দাম নির্ধারণ করেন শিল্পপতিরা। এটা সারা দুনিয়াতেই হয়। সেই শিল্পোন্নত দেশগুলোতে কৃষিপণ্যের দামটিও নির্ধারণ করেন কৃষকেরা। কিন্তু বাংলাদেশের কৃষকেরা তা পারেন না। নিজের উৎপাদিত পাট, তুলা, বাদাম, ধানের দামটা নির্ধারণ করতে পারেন না। একই অবস্থা লবণচাষিদেরও। চাষিদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারিভাবে কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ করার দাবি কি খুব অপ্রাসঙ্গিক?