ওয়াকাফ বিল নিয়ে কলকাতায় অবরোধ ও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েক দিন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় কলকাতায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে মুসলিম সমাজ।
আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে প্রতিবাদের পাশাপাশি কলকাতার রাজপথ অবরোধ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কুশপুতুলও পোড়ানো হচ্ছে।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে মুসলিম নেতাদের স্পষ্ট বক্তব্য, তারা এই আইন মানেন না। এটি মুসলিমবিরোধী। এই আইনে মসজিদ, কবরস্থান, দরগা নিয়ে নেওয়া হবে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) জুম্মার নামাজের পরই কলকাতার ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদ ও জাকারিয়া স্ট্রিটের নাখোদা মসজিদের পক্ষ থেকে ধর্মতলায় সড়ক অবরোধ করা হয়।
ওই অবরোধ থেকেই হাতে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার স্লোগান ও শাউটিং চলতে থাকে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায় বিক্ষোভকারীরা।
এরপর রাজভবনে রাজ্যপাল ড. সি ভি আনন্দ বোসের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে যায় পাঁচজনের প্রতিনিধি দল। তাদের দাবি, অবিলম্বে ওয়াকফ বিল প্রত্যাহার করতে হবে এবং এই বিষয়ে রাজ্যপাল যেন দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবগত করেন।
প্রতিবাদকারীদের অভিযোগ, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি যে সরকার চালাচ্ছে, সে সরকার শুধু মুসলমানদের খারাপ চাইছে। সরকার যে ওয়াকফ বিল নিয়ে এসেছে সেই বিলের কোনো দরকার ছিল না। স্বাধীনতার আগে থেকেই ভারতে ওয়াকফ বিল ছিল।
তাদের দাবি, এই ওয়াকফ সম্পত্তি মুসলমানদের সম্পত্তি ছিল, আছে এবং আগামী দিনেও থাকবে।
ভারতে মুসলমানদের দান করা শত শত কোটি ডলার মূল্যের ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও বহু বছরের পুরনো পরিচালনা পদ্ধতি সংশোধন করে গত সপ্তাহে দেশটির পার্লামেন্টে বিল পাস হয়।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনার জন্য এই বিল আনা হয়।
কিন্তু বিরোধী দল এবং প্রায় সব মুসলিম সংগঠনই বলছে, এই বিলটি আনাই হয়েছে ভারতের সর্ববৃহৎ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করতে।
বিলটি পাস হওয়ার দিন থেকেই ভারতজুড়ে এর প্রতিবাদ চলছে, যার প্রভাবে শুরু থেকেই উত্তপ্ত ছিল কলকাতা। শুক্রবারও সেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা যায়।