মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি অনুযায়ী বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপ করা অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ শুল্কভার লাঘবে ৬টি পদক্ষেপে যাচ্ছে সরকার। আজ রোববার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক থেকে পাওয়া মতামতের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া দায়িত্বশীল একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সূত্রটি জানিয়েছে, বৈঠকে অংশগ্রহণকারী খাত সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা ও বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা চলমান সংকট উত্তরণে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। এর মধ্যে ৬টি বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকার শিগগিরই এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।
প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে নতুন শুল্কহার কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অন্তত তিন মাস সময় চাইবে বাংলাদেশ।
এ ছাড়া বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আবার আমদানির ক্ষেত্রে, যে পণ্য আমদানি হলে বাংলাদেশ কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে কিম্বা ভ্যালু এডিশন করে রপ্তানি করতে পারবে, সেসব পণ্যে জোর দেওয়া হবে।
পাশাপাশি নতুন করে আরোপ করা ৩৭ শতাংশ শুল্ক যাতে মার্কিন প্রশাসন প্রত্যাহারের রাজি হয়, সে লক্ষ্য মার্কিন কিছু পণ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আরোপ করা ট্যারিফ বা শুল্কহার যৌক্তিকভাবে কমানো হবে।
একইভাবে মার্কিন প্রশাসনের নতুন পদক্ষেপ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করতে অতি দ্রুত উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করা হবে।
এই ক্ষেত্রে আলোচনার প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে দেরি হলে দুই দেশের আলোচনার একমাত্র প্ল্যাটফর্ম টিকফা ফোরামে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান জানান দেওয়ার ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে দুই দেশের সরকারের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনা চালিয়ে নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরের (ইউএসটিআর) সঙ্গে দফায় দফায় ই–মেলে চিঠি দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান। এতে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন—এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআই প্রশাসক, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও কয়েকজন অর্থনীতিবিদ।