সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড মূল প্রতিষ্ঠান বেকোর (তুরস্কের কচ গ্রুপের একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রতিষ্ঠান) সহযোগিতায় বাংলাদেশে অবস্থিত অত্যাধুনিক ‘হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস প্ল্যান্ট’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি আয়োজন করে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। বাংলাদেশে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া, এই খাতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনরা এই ইভেন্টে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে বেকো ও সিঙ্গার বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন কচ হোল্ডিংয়ের কনজ্যুমার ডিউরেবলস গ্রুপের সভাপতি ফাতিহ কেমাল এবিচলিওলু, বেকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাকান বুলগুরলু, বেকোর তুর্কিয়ে ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (সিসিও) জান ডিনচার, বেকোর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) বারিস আলপারসলান, বেকোর প্রধান উৎপাদন ও প্রযুক্তি কর্মকর্তা নিহাত বাইজ, বেকোর প্রধান ক্রয় ও সাপ্লাই চেইন কর্মকর্তা জেম কুরাল ও বেকোর দক্ষিণ এশিয়ার নির্বাহী পরিচালক (অর্থ বিভাগ) সিবেল কেসলার।
উপস্থিত অতিথিরা নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। বিশেষ করে, কচ গ্রুপ, বেকো ও সিঙ্গার বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের বাজার নিয়ে ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করেন।
নতুন এই কারখানা কেবল সিঙ্গার বাংলাদেশের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে না বরং বাজারে এই প্রতিষ্ঠানের অবস্থানকেও শক্তিশালী করবে বলে মন্তব্য করেন কচ হোল্ডিংয়ের কনজ্যুমার ডিউরেবলস গ্রুপের সভাপতি ফাতিহ কেমাল এবিচলিওলু। তিনি বলেন, কোচ হোল্ডিংসে আমরা আমাদের মূল্যবোধ ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যে অনুপ্রাণিত হয়ে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিভিন্ন রকম বাজারের পরিবর্তনশীল বাজারের চাহিদা পূরণে, প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য উপযোগী সমাধান নিশ্চিত করতে এবং শিল্প খাত ও কমিউনিটি উভয়েরই উন্নতি হবে এমনভাবে আমাদের বিনিয়োগের কৌশল নির্ধারণ করা হয়। তরুণ ও উদ্যমী জনশক্তি এবং দ্রুত নগরায়ণের কারণে দক্ষিণ এশিয়া আমাদের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে। গত ১০ বছর ধরে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ও সম্ভাবনার ক্ষেত্রে উদীয়মান বাজার হিসেবে বাংলাদেশ সহ এই অঞ্চল জুড়ে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে বেকো।’
১ লাখ ৩৫ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত এই প্ল্যান্ট বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প। এই প্ল্যান্টে রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, ওয়াশিং মেশিন, এয়ার কন্ডিশনার ও অন্যান্য হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস তৈরি করা হবে। এই উদ্যোগ সিঙ্গার বাংলাদেশের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বাজারে এই প্রতিষ্ঠানের অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে। দীর্ঘমেয়াদি বাংলাদেশকে কনজিউমারস ডিউরেবলসের একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ভূমিকা রাখবে এই প্ল্যান্ট।
এ ছাড়া, একটি শক্তিশালী স্থানীয় সাপ্লায়ার (সরবরাহ) ইকোসিস্টেম তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে, এই খাতের আমদানি নির্ভরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। অদূর ভবিষ্যতে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানির পরিকল্পনাও রয়েছে, যা আঞ্চলিক বাজারে সিঙ্গার বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় করবে।
নতুন এই প্ল্যান্ট সিঙ্গার বাংলাদেশের জন্য একটি টেকসই, স্মার্ট এবং সর্বোচ্চ মানের স্থানীয় উৎপাদন প্রক্রিয়ার সূচনা করবে বলে মন্তব্য করেন বেকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাকান বুলগুরলু। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কেবল একটি বাজারের চেয়ে বেশি কিছু; এটি সুযোগ, উদ্ভাবন ও সম্ভাবনার এক অনন্য দিগন্ত। সিঙ্গারের ১২০ বছরের ঐতিহ্য ও সুগভীর স্থানীয় জ্ঞানের সঙ্গে বেকোর বৈশ্বিক দক্ষতা ও বিস্তৃত নেটওয়ার্কের সমন্বয় বাংলাদেশে আমাদের প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপনে সহায়ক হবে।