Homeঅর্থনীতিবিএসইসির নিরাপত্তা ২৬ আনসারের হাতে

বিএসইসির নিরাপত্তা ২৬ আনসারের হাতে


কর্মকর্তাদের মধ্যে মতানৈক্যের জেরে গত ৫ মার্চ ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদারে নড়েচড়ে বসেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিএসইসি ভবনের নিরাপত্তায় সশস্ত্র আনসার নিয়োগ দিয়েছে সংস্থাটি। মোট ২৬ আনসার সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সশস্ত্র ৪ জন।

১ এপ্রিল থেকে আনসার সদস্যরা বিভিন্ন শিফটে বিএসইসির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালন করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানতে চাইলে বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিএসইসি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এর নিরাপত্তা জোরদার করা প্রয়োজন। প্রক্রিয়া মেনে নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য আনসার সদস্য চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। নির্ধারিত পদ্ধতি মেনে ২৬ আনসার সদস্য দেওয়া হয়েছে। বিএসইসির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন আনসার সদস্যরা।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসি ভবনের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে আনসার নিয়োগ করার প্রসঙ্গে কমিশন সভায় আলোচনা হয়েছে। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসিকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর (সিআইআই) বিবেচনায় কমিশন ভবনের নিরাপত্তা বিধানে ঢাকা মহানগর আনসার দক্ষিণ জোন থেকে আনসার সদস্য চাওয়া হয়। এরপর ১৭ মার্চ বিভিন্ন শর্তের আলোকে আবাসন সুবিধা বাদে মোট ২৬ আনসার সদস্য নিয়োগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।

তথ্যমতে, বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬ আনসার সদস্য বিভিন্ন শিফটে দায়িত্ব পালনের কথা থাকলে এখন পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। বর্তমানে বিএসইসির নিরাপত্তায় তিন শিফটে ১৫ থেকে ১৬ আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে অস্ত্রধারী ৪ সদস্য রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন চেয়ারম্যান ও কমিশনার ফ্লোরে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্য দুজন প্রধান ফটকের দায়িত্বে রয়েছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের ফ্লোরে একজন আনসার সদস্য অস্ত্রসহ দায়িত্ব পালন করছেন। আরও একজন সশস্ত্র আনসার সদস্য থাকলেও তিনি সে সময় উপস্থিত ছিলেন না। তবে আরেক আনসার সদস্যকে বন্দুক ছাড়াই দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

এ ছাড়াও লিফট থেকে বের হয়েই চেয়ারম্যান-কমিশনারদের ফ্লোরে প্রবেশের আগেই আরও একজন আনসার সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। ভবনের ভেতরে ছাড়াও বিএসইসির সামনে বেশ কয়েক আনসার সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। এদের মধ্যে একজনকে বিএসইসিতে ঢোকার একেবারে প্রবেশদ্বারে সার্বক্ষণিক অবস্থান করতে দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এখনো আনসার সদস্যদের পুরোপুরি দায়িত্ব বণ্টন করা হয়নি। কোন ফ্লোরে কতজন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন, সেটাও নির্ধারণ করা হয়নি। এখনো অনেকটা অগোছালোভাবেই দায়িত্ব পালন করছেন তাঁরা।

বর্তমানে সকালে ৬, বিকেলে ৬ এবং রাতের শিফটে ৩ জন করে আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। আনসার সদস্যদের আবাসন ব্যবস্থার বন্দোবস্ত না হওয়ায় নিয়োজিত ২৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন না।

বিএসইসিতে দায়িত্বরত এক আনসার সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চেয়ারম্যান স্যারের সঙ্গে আমাদের ডিউটি। অফিস চলাকালে সব সময় ডিউটি পালন করতে হবে। নিরাপত্তার জন্য জন্য আমাদের শটগান দেওয়া হয়েছে।’

আরেক আনসার সদস্য বলেন, ‘২৬ জন নিয়োগ করা হলেও এখনো সবাই আসেননি। আমাদের এখানে থাকার ব্যবস্থা নেই। হয়তো সেটা হয়ে গেলে সবাই থাকবেন। যতটুকু জানতে পেরেছি, এখানে থাকার ব্যবস্থা নেই, তার পরিবর্তে ভাতা প্রদান করা হবে।’

গত ৫ মার্চ পদত্যাগের দাবিতে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এবং অন্য তিন কমিশনার মু. মহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখকে অবরুদ্ধ করে রাখেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। কর্মকর্তাদের দাবি, কমিশনের কর্তারা অযোগ্য। বিএসইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। কাজের ক্ষেত্রেও কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না।

চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের ফ্লোরে অস্ত্রসহ আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

তবে কমিশনের কর্মকর্তাদের বক্তব্য, পুঁজিবাজারের ১২টি কোম্পানির তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে পাওয়ার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে একজন নির্বাহী পরিচালককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় কমিশন। আরও অনেক দোষী কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এতে অভিযুক্ত কর্মকর্তারা যোগসাজশ করে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভুল বুঝিয়ে কমিশনের বিরুদ্ধে এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

পরদিন ৬ মার্চ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান। তবে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনে মুক্ত হয়েছেন সব কর্মকর্তা। অভিযুক্তদের মধ্যে বর্তমানে ১৪ কর্মকর্তা বিএসইসিতে অফিস করছেন। আরেকজন পদত্যাগ করেছেন এবং একজন বাধ্যতামূলক অবসরে আছেন।

ওই ঘটনার পরে বেশ কিছুদিন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিএসইসির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। তবে এবার স্থায়ীভাবে সশস্ত্র আনসার সদস্য নিয়োগ দেওয়া হলো।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত