এখন থেকে বিমান ভ্রমণে যাত্রীদের ট্রাভেল কর নিজ নিজভাবে পরিশোধ করতে হবে। টিকিটের সঙ্গে যুক্ত করে এয়ারলাইনস কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে এ কর আদায় বন্ধ করে যাত্রীরা সরাসরি ট্রেজারিতে টাকা জমা দিয়ে চালান সংগ্রহ করবেন এবং সেই চালান দেখিয়েই ভ্রমণ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব ভবনে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ তথ্য জানান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ট্রাভেল কর টিকিটের সঙ্গে আদায় করা হলেও সরকারের হাতে সেই অর্থ ঠিকমতো পৌঁছায় না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো দেউলিয়া হয়ে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলে চলে যায়। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়ে যায়। তাই ভবিষ্যতে যাত্রীরাই কর দেবেন, চালান নেবেন এবং সেই চালান দেখিয়েই তারা বিমানে ভ্রমণ করবেন।’
প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নেওয়া বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর সংগঠন এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি) বিমানের জেট ফুয়েলের ওপর আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট অব্যাহতি, এবং যন্ত্রপাতির ওপর করহার হ্রাসের দাবি তুলে ধরে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এখন এমন এক যুগে আছি, যেখানে কর দেওয়া বাচ্চাদের খেলনার মতো সহজ। কিন্তু তবুও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব পাচ্ছি না, যা খুবই দুঃখজনক। করহার কমানোর দাবি তোলার আগে বোঝা উচিত, রাজস্ব না এলে দেশ চলবে কীভাবে?’
তিনি আরও বলেন, যেসব খাতে ভ্যাট ও করহার অতিমাত্রায় বেশি, সেখানে পরিবর্তনের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভ্যাট কাঠামো সহজ করতে ‘সিঙ্গেল ডিজিট ভ্যাট হার’ চালুর পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
আলোচনায় আরও কয়েকটি খাতের নেতারা বাজেট প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রান্সফরমার অ্যান্ড সুইচগিয়ার তাদের ৬৫ শতাংশ কাঁচামালের ওপর সম্পূর্ণ শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানায়। একইসঙ্গে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি উৎপাদনের কাঁচামালে ৫ শতাংশ শুল্ক এবং ফিনিক্স পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক রাখার আহ্বান জানায়।
অপরদিকে, সোলার মডিউল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনা চায় স্থানীয় উৎপাদকদের জন্য। যাত্রীবাহী নৌযানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের ওপর ভ্যাট মওকুফের দাবি জানায় ইংল্যান্ড ওয়াটারওয়ে অ্যাসোসিয়েশন।
এনবিআর জানিয়েছে, এসব প্রস্তাব পর্যালোচনা করে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে যুক্ত করা হবে উপযুক্ত বিষয়গুলো।